Image description

গণ-অভ্যুত্থানের পর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া অন্তত আধা ডজন সন্ত্রাসী এখন দেশ ছাড়ার পথ খুঁজছেন। এরই মধ্যে পাসপোর্ট করে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন দেশ ছেড়ে গেছেন বলে তথ্য মিলেছে। তার মতো দেশ ছাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন সুইডেন আসলামসহ অন্য সন্ত্রাসীরাও। এরইমধ্যে কয়েকজন পাসপোর্ট করতে পেরেছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দীর্ঘদিন কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীদের মাঝে কিলার আব্বাস, সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল, সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসুর মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি মেলে। তাঁদের অনেকে এলাকায় ফিরে কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও পরে আবারও সন্ত্রাসী দল গোছানো শুরু করেন। সূত্র মতে, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগে ভারত থেকে দেশে ফেরেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। তবে সুব্রত বাইন আদালতে দাবি করেছেন, তাঁকে দুই বছরের বেশি সময় আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল।

গোয়েন্দা সূত্র মতে, সুব্রত বাইন ফেরার পর নতুন করে বাহিনী গড়ে তোলেন। বাড্ডা, গুলশান, মগবাজার এলাকায় হত্যা ও চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য বানাতে শুরু করে তাঁর বাহিনী। অন্য শীর্ষ সন্ত্রাসীরা সরাসরি অংশ না নিলেও তাঁদের বাহিনী রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, আদাবর, কাফরুল, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে আমাদের বিশেষ কার্যক্রম চলছে।

ঈদের আগে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীদের খুঁজছি আমরা। সন্ত্রাসীদের বিচার হতে হবে। তাঁদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

সূত্র জানায়, কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া ভয়ংকর সন্ত্রাসীরা দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।

তবে তাঁদের  মধ্যে সুইডেন আসলাম ও টিটন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে না পারায় তাঁরা পাসপোর্ট করতে পারছেন না। তবে যেসব সন্ত্রাসীর এনআইডি রয়েছে, তাঁদের পাসপোর্ট করতে সমস্যা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, পাসপোর্টের ক্ষেত্রে এখন আর আগের মতো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগছে না। ফলে যাঁর এনআইডি রয়েছে, তিনিই আবেদন করলে পাসপোর্ট পাচ্ছেন। আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলে পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। তবে কাউকে সন্দেহ হলে তাঁর পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনু বিভাগ) মো. শামীম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাসপোর্টের বিষয়ে কখনো কখনো আমাদের মতামত চাওয়া হয়। আমরা আইন অনুযায়ী তার নির্দেশনা দিয়ে থাকি।’ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পসাপোর্টের আবেদনসংক্রান্ত বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না।’

তবে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও এ দেশের নাগরিক। তাঁদেরও পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি তাঁরা পাসপোর্ট পেয়ে বিদেশে যেতে পারেন তা হলে তো দেশের অপরাধই কমল। তবে পাসপোর্ট পেলেই যে অন্য দেশের ভিসা সহজে পেয়ে যাবে, বিষয়টা তো সে রকম না।