
মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে নেওয়া ৭ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ের ছয়টি মেগা প্রকল্প শেষ না করেই মাঝপথে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া এসব প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটির অগ্রগতি মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ। এ প্রকল্পগুলো বর্তমান অবস্থাতেই সমাপ্তি ঘোষণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৯টি প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্পের অনুকূলে মোট ১ হাজার ৪২৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের দশমিক ৩৭ শতাংশ।
জানা গেছে, দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ফারুক-ই-আজম সারা দেশে মন্ত্রণালয়ের চলমান সব প্রকল্পের খোঁজ নিতে গিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ পান। পরে দেশের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের সব প্রকল্প বন্ধ রাখার নির্দেশনা আসে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে তিনটি প্রকল্প আংশিকভাবে চলমান রেখে বাকি ছয়টি প্রকল্প অসমাপ্ত অবস্থাতেই সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রকল্পের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, বন্ধ হতে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে কয়েকটি অঙ্কুরেই ঝরে গেছে, কিছু প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ। আবার কিছু প্রকল্পের মেয়াদ গত বছর শেষ হলেও কাজের অগ্রগতি ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের বেশি হয়নি। এসব প্রকল্পের মেয়াদ দুবার বাড়িয়েও যথাসময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এসব প্রকল্পের মধ্যে যেগুলো শেষদিকে, সেগুলো সমাপ্ত করা হবে। কাজ শেষ না হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে কয়েকটিতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করে ফারুক-ই-আজম সব প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং বলেন, যে প্রকল্প যতটুকু হয়েছে, তা সেখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করে কাজ শেষ করতে হবে। বর্তমানে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতের বিভিন্ন বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
অভিযোগ উঠেছে, অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত করা এসব প্রকল্পের বেশিরভাগের অগ্রগতি বাস্তবতার চেয়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেশি দেখানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব অনিয়ম হয়েছে। আবার কোনো কোনো প্রকল্পে অগ্রগতির চেয়ে বেশি ব্যয় করার অভিযোগও আছে।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও নতুন প্রজন্মের মধ্যে চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার নামে দলীয়করণ করে প্রকল্প গ্রহণ এবং অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। বড় প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ডিপিপি রিফিউ করে ব্যয় বাড়িয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। শুধু চলমান প্রকল্পই নয়, গত ১৬ বছরে নেওয়া ও সমাপ্ত হওয়া বেশিরভাগ প্রকল্পেই ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালবেলাকে জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেওয়ার পরই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কাজ করার পর যদি টাকা না পাওয়া যায়—এ আশঙ্কায় শ্রমিকদের বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। কারণ যতটুকু কাজ করা হয়েছে, সে পরিমাণে বিল দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এতে পুরো কাজ করলে যে পরিমাণে লাভ হতো, এখন শুরুতেই কাজ বন্ধ করায় তার চার ভাগের একভাগ লাভও আসবে না। আর যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কমিশনে বা কাজ কিনে কাজ করছে, তাদের লাভের বদলে উল্টো ক্ষতি হবে।
যেসব প্রকল্প বন্ধ হচ্ছে
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প: অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কার্যবিবরণী সভায় বলা হয়েছে, যেসব বীর নিবাসের টেন্ডারের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, শুধু সেগুলোর কাজ চলবে। এই প্রকল্পে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে; কিন্তু কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি, এমন সব কাজ স্থগিত থাকবে এবং নতুন করে কোনো টেন্ডার আহ্বান করা যাবে না। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সুবিধা পেয়েছেন কি না, তা যাচাই-বাছাই করতে কমিটি গঠন করা হবে। সভায় আরও বলা হয়, ভৌত কাজ শতভাগ সমাপ্ত হয়েছে এবং আর্থিক অগ্রগতি ৭৫ ভাগ—এমন প্রায় আড়াই হাজার আবাসনের আর্থিক ব্যয় সম্পন্ন করে এগুলোকে সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে এবং অবশিষ্টগুলো কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) (১ম সংশোধন): একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয় ও আত্মসমপর্ণের দলিল স্বাক্ষরের উজ্জ্বলতম স্মৃতিকে সংরক্ষণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন, ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ৩৯৭ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৮ জানুয়ারিতে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৯০ শতাংশ হয়েছে বলে প্রকল্প পরিচালক দাবি করলেও বাস্তবে ৮০ শতাংশ কাজ হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কার্যবিবরণী সভায় প্রকল্পের স্থানটি সরেজমিন পরিদর্শন না করা পর্যন্ত সব কাজ স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (১ম পর্যায়): ৪৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সমাধি সংরক্ষণের এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৮-এর জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। পরে মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বরে এডিপি পর্যালোচনা সভায় প্রকল্পটির কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প (জামুকা): মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ সমুন্নত রেখে মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় ২০২২ সালে এ প্রকল্প শুরু হয় চলতি বছর জুনে শেষ হওয়া কথা ছিল। কিন্তু এ প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ। এর মধ্যেই এ প্রকল্প বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বীরের কণ্ঠে বীরগাথা: মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা এখনো বেঁচে আছেন, তাদের সাক্ষাৎকার আগামী প্রজন্মের জন্য সংগ্রহ, সম্প্রচার ও সংরক্ষণের পাশাপাশি তাদের নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সম্মিলন ঘটানো এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের রণাঙ্গনের স্মৃতি নিয়ে তথ্যচিত্র এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বিভিন্ন সেক্টরে সংঘটিত সম্মুখ যুদ্ধসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির ডকুমেন্টারি নির্মাণ করে জাতীয়ভাবে ই-আর্কাইভ স্থাপন করতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার টাকার প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। তবে এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র ৯ শতাংশ। ৮০ হাজার ক্লিপের মধ্যে ১২ হাজার ৭৮৮টি সম্পাদিত হয়েছে। কাজের অগ্রগতির চেয়ে বেশি অর্থ ছাড়ের অভিযোগে দুদক অভিযান পরিচালনা করেছে। জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণে করা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে।
খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্নয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানগুলো স্মৃতিস্তম্ভ ও জাদুঘর নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প: চারজন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল উন্নয়ন ও জাদুঘর নির্মাণ, দুটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অবকাঠামো উন্নয়ন, তিনটি ঐতিহাসিক স্থান ও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও জাদুঘর নির্মাণে ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার টাকার এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে গত নভেম্বর পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ। চারটি স্কিমের ডিজাইন বা নকশা প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর এডিপি পর্যালোচনা সভায় এ প্রকল্পটির কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়।
যে তিন প্রকল্প আংশিক চলমান থাকবে
মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প (২য় সংশোধিত): মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে, নতুন প্রজন্মকে স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় ঘটনাকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ৬৪টি জেলার ২৩১টি উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ ১১ হাজার টাকার প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।
মুক্তিযুদ্ধকালে মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ (২য় সংশোধন): মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর আত্মত্যাগ ও মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যের জীবন উৎসর্গের বিষয়টি স্মৃতিবহ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ৭১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০২৪ ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাগজে-কলমে প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ বলা হলেও বাস্তবে তা ৭০ শতাংশ বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ এ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন অনুমোদন পায়।
১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ (২য় পর্যায়): মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রতকরণে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০টি জেলার ১১০টি উপজেলার ২৮০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও রায়ের বাজার বধ্যভূমির আনুষঙ্গিক কাজ সম্পাদন করার জন্য নেওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ জুলাই ২০১৮ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত। প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র ১৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ৪২টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে তিনটি প্রকল্প বাদে অন্য সব প্রকল্প অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে যেসব প্রকল্প শেষের পথে, সেগুলো আর সমাপ্ত ঘোষণা করার কিছু নেই। পরবর্তী সময়ে হয়তো এ প্রকল্পগুলো চালু করা হতে পারে।’