
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে সোমবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার (১ জুন) নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সরকার দাবি মেনে না নেওয়ায় সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে৷ মহাসমাবেশে শুধু বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো চালু রেখে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ মিনারে যোগ দেবেন।
সাতটি দাবি নিয়ে গত ১২ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন এই কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচির ১২তম দিনে আন্দোলনরতদের সঙ্গে সংহতি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য মানা হবে না। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা মাঠে পরিশ্রম করে দেশের জনগণকে বিদ্যুৎসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তারা কোনো অন্যায্য দাবি নিয়ে আসেননি। মানবিক মর্যাদাপূর্ণ জীবনের জন্য আন্দোলন করছেন। তারা মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করেননি, বিদ্যুৎসেবা চালু রেখে সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করছেন। পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা অশান্ত হলে দেশে অন্ধকার নেমে আসবে। তাদের সে পথে ঠেলে দেবেন না।
তিনি বিদ্যুৎ উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। আলোচনার মাধ্যমে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলন কর্মসূচিতে এনসিপির পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিবাদী কাঠামো রয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। এই কাঠামো ভাঙতে সবাইকে হাত লাগাতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
৭ দফা দাবিগুলো হলো—
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ;
২. এক ও অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন;
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ;
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল;
৫. গ্রাহকসেবার স্বার্থে লাইন-ক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ;
৭. এবং পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণসহ দুই দফা দাবিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামেন সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী।