
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজ রবিবার (১ জুন) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে প্রসিকিউশন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দাখিল করা হবে। এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া এদিন সরাসরি সম্প্রচার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে গাজী এম এইচ তামিম বলেন, আগামীকাল (রবিবার) শেখ হাসিনার মামলার আনুষ্ঠানিক চার্জ দাখিল করা হবে ট্রাইব্যুনালে। কালকের (রবিবার) কোর্ট প্রসিডিংস (শুনানি) বিটিভির মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে সরাসরি সম্প্রচার করা হতে পারে। এর আগে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগামীকাল (রবিবার) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে প্রসিকিউশন।
গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে। ওই দিন এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর জানান, আন্দোলন দমনে নির্বিচারে ১৪০০- এর বেশি মানুষ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫টি গুরুতর অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়।
প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।