
বাগেরহাট মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত একটি বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। নাবিকদের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে মালামাল লুটের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে কোস্টগার্ড।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এম.ভি সেজুঁতি জাহাজ ভারত থেকে পাথরবোঝাই করে গত বছরের ২২ জুন মোংলা বন্দরের বেসক্রিক এলাকায় নোঙর করে। এরপর জাহাজটি পণ্য খালাস কাজ শেষ করে। পণ্য খালাস শেষে জাহাজটি বন্দর ত্যাগের সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে জাহাজটির বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি। সেই থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জাহাজটি প্রায় বছরখানেক ধরে বন্দর চ্যানেলের বেসক্রিক এলাকায় ছিল।
আরও জানা গেছে, জাহাজটি চলাচল না করায় বাকি পড়ে জাহাজের নাবিকদের বেতন। ফলে আর্থিক সংকটে পড়েন জাহাজের নাবিকরা। ওই বাণিজ্যিক জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন ডাকাত দলের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করে। তাদের যোগসাজশে কয়েক দফায় জাহাজের মালামাল চুরি করে বিক্রি করে দেয়। এরপর সর্বশেষ আবারও জাহাজটিতে ডাকাতি হয়। কিন্তু সাজানো এ ডাকাতির ঘটনা জানাজানি হলে অভিযানে নামে কোস্ট গার্ড।
অভিযানে মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে আটক হয় ডাকাত সুমন হাওলাদার (২১), ডাকাতির মালের ক্রেতা সুমন হোসেন (৩০) ও ডাকাতির পরিকল্পনাকারী মূলহোতা জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জাহাজের ডাকাতি করা বিভিন্ন ধরনের মালামাল।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যরা ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা জড়িত ছিল। জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭ মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পায়নি। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এ কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র সরানো হয়।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধার করা মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই সঙ্গে আটক ব্যক্তিদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।