
পদোন্নতির অপেক্ষায় থাকা সরকারি চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের জন্য পাঁজ হাজার ৮৯টি সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করেছে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই এক বছরের জন্য এই পদ তৈরি করে দুটি সার্কুলার জারি করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর নির্বাচিত ব্যক্তিদের পদোন্নতির চিঠি জারি করবে মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া, চিকিৎসকদের জন্য আরও এক হাজার ৮৫৩টি সুপারনিউমারারি পদ তৈরির প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগির তা সম্পন্ন হবে।
সুপারনিউমারারি পদ হল—পদোন্নতি বা কর্মী সমন্বয়ের সুবিধার্থে নিয়মিত কাঠামোর বাইরে তৈরি করা অস্থায়ী পদ। প্রশাসন, পুলিশ ও পররাষ্ট্র ক্যাডারে এই পদ সৃষ্টির পূর্ব রেওয়াজ থাকলেও সম্প্রতি অন্যান্য ক্ষেত্রেও এটি চালু করা হয়েছে।
সাত হাজার জনেরও বেশি চিকিৎসক বছরের পর বছর কোনো পদোন্নতি না পাওয়ায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত মার্চে এই পদোন্নতির জন্য একদল চিকিৎসক কর্মবিরতি পালন করেন।
'বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম'র ব্যানারে সেই আন্দোলন করেন চিকিৎসকরা। পদোন্নতির বিষয়ে সরকারের আশ্বাস পাওয়ার পর ১২ সপ্তাহের জন্য তাদের আন্দোলন স্থগিত করেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ গত ২০ মে তিন হাজার ৩০টি সুপারনিউমারারি পদ তৈরির বিজ্ঞপ্তি দেয়। যার মধ্যে ১৫০টি অধ্যাপক, ৮৫০টি সহযোগী অধ্যাপক এবং দুই হাজার ৩০টি সহকারী অধ্যাপক।
মঙ্গলবার আরও দুই হাজার ৫৯টি পদ তৈরির আরেকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০১টি অধ্যাপক, ৫৪৮টি সহযোগী অধ্যাপক এবং এক হাজার ৩১০টি সহকারী অধ্যাপক।
যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, তারা বৈঠক করে নির্বাচিত ব্যক্তিদের পদোন্নতির চিঠি দেবেন। 'প্রক্রিয়াটি শিগগির শুরু হবে।'
তিনি বলেন, আরও এক হাজার ৮৫৩টি সুপারনিউমারারি পদ তৈরির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন এবং সেটাও শিগগির অনুমোদন পাবে।
এই পদগুলো এক বছরের জন্য তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যদি ওই সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পদধারীদের নিয়মিত পদে পদোন্নতি না দেওয়া হয়, তাহলে সরকার তাদের মেয়াদ বাড়াতে পারে।'
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক কারণে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই চিকিৎসকদের অনেককেই পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে এই চিকিৎসকরা তাদের পদোন্নতি মঞ্জুর করতে মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভিন্ন পদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চায়।
পদোন্নতির জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে কিছু মানদণ্ডের ভিত্তিতে। শূন্য পদের সংখ্যা অপর্যাপ্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
নিয়মিত পদের জন্য পদোন্নতি প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে এবং শিগগির তা সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালক।