Image description

টাকা জমিয়েছিলেন গ্রামে ঘর বানাবেন বলে। পরিকল্পনা ছিল সেখানেই বসবাস করবেন। ঘরের কাজ শুরুও করেছিলেন তিনি। কিন্তু কাজ শেষ করার আগেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন।

বলছিলাম মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনয়নের নোহাটা গ্রামের আসিফ ইকবালের কথা। ‍তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করে একটি গার্মেন্টসের বায়িং ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতেন।

জানা গেছে, গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুর এলাকা ছিল উত্তাল। সেদিন বাসার পাশে মসজিদ থেকে আসরের নামাজ আদায় করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন আসিফ। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিরপুর-১০ নম্বর ফলপট্টি এলাকায় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালায়। একই সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়। এ সময় আসিফের বুকে গুলি লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন বন্ধুরা আসিফকে আল হেলাল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানে সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃত্যু হয় ।

আসিফের বাবা এম এ রাজ্জাক বলেন, আসিফের খালাতো ভাই রাশেদুল লাশ বাড়ি নেওয়ার ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা বলে। রাশেদুল আমাকে বলে আসিফের লাশ সরাসরি নিয়ে যাওয়া যাবে না। গোসল করিয়ে একবারে নিয়ে যেতে হবে। এ সময় কারফিউ চলছিল। ঘটনার দিন রাত ১১টায় আসিফের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। পরদিন সকাল ১০টায় জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে ছেলের লাশ দাফন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আসিফের মৃত্যুতে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ঘর আর করা হলো না তার। আমি ও আমার স্ত্রী অসুস্থ। সপ্তাহখানেক আগে আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আমার সন্তানের কবর জিয়ারত করে এসেছি। জামায়াতে ইসলামী ও জুলাই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কিছু টাকা পেয়েছি। জুলাই ফাউন্ডেশনের সঞ্চয়ী প্রোগ্রামে কোরবানির ঈদের আগেই হয়তো কিছু টাকা পাওয়া যাবে বলে মাগুরা জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন। পরিবার নিয়ে ভালোভাবে যেন বেঁচে থাকতে পারি, সবার কাছে সে সহযোগিতা চাই।