
Shafquat Rabbee Anik (শাফকাত রাব্বি অনিক)
"জুলাই ঘোষণা " একটা পলিটিকাল প্রোডাক্টের ব্র্যান্ড নেইম । এই নাম একটা পলিটিকাল প্লাটফর্ম তাদের নিজস্ব আইডিয়ার মার্কেটিং হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে । এইটা অবশ্যই ১০০ % লেজিটিমেট এবং গ্রহণযোগ্য একটা পলিটিকাল মার্কেটিং বা ব্র্যান্ডিং ক্যাম্পেইন, প্রোডাক্টটা যাই হোক না কেন।
গত জুলাই মাসের পর থেকে প্রায় ১০ মাস বাংলাদেশে মোটাদাগে ট্রাডিশনাল কোন রাজনীতি ছিল না বললেই চলে।
সব বড় দল একই ছাতার নিচে এসে দাঁড়িয়েছিল তত্বাবধায়ক সরকার এর বিগ টেন্ট পলিটিকাল ফ্রেম ওয়ার্কে।
সবাই টিভিতে গিয়ে বলছিল আমরা সরকারকে সাহায্য করছি, মঙ্গল চাচ্ছি , সরকার যাতে ফেইল না করে সেই চেষ্টা করছি ইত্যাদি ইত্যাদি।
সেই সিচুয়েশন আর নেই।
দেশে রাজনীতি ব্যাক করেছে। মানে সরকার বনাম বিরোধী দলের গতানুগতিক রাজনীতি আরকি।
রাজনীতি ফিরেছে ধীরে ধীরে এবং জোরে সরে।
সরকারের বিরোধীতা শুরু হয়েছে। সরকার এক কথা বললে, অন্যরা অন্য কথা বলা শুরু করেছে। সরকার এক সিদ্ধান্ত দিলে , অন্যরা অন্য সিদ্ধান্ত চাচ্ছে।
এক পর্যায়ে জোড় করে দাবি আদায় করার রাজনীতিও শুরু হয়ে গেছে।
এই অবস্থায় , কিছু দিনের মধ্যে যেই জুলাই ঘোষণা আসতেছে , সেই জুলাই ঘোষণা নিয়ে রাজনীতি হবে।
তত্বাবধায়কের কোন ফর্মাল দল না থাকলেও , এফেক্টিভলি সরকারি দল বলতে যা বোঝায় সেটা হচ্ছে এই মুহূর্তে এনসিপি। তারা জুলাই ঘোষণা দেবে এবং ট্রাডিশনাল রাজনীতির রিফ্লেক্সিভ ধারায় বিরোধী দলেরা তার বিরোধিতা করবে।
এর কারণ একটাই।
বিরোধী দল গুলো "সরকার দলের" জুলাই বিষয়ক ব্র্যান্ডিংকে তাদের নিজের ব্র্যান্ডিং বলতে চাইবে না। কারণ এই ব্র্যান্ডিং বিরোধীদল গুলো আনে নাই , এনেছে "সরকারি দল" এনসিপি।
এখন সবাই মিলেমিশে এই ব্র্যান্ডিং এর একই ছাতায় আসার যে পজিটিভ ফলাফল আসতে পারে, সেটার সুফল ভোগ করবে এই ব্র্যান্ডিং যারা বানিয়েছে সেই এন সি পি।
আর একারণেই জুলাই নিয়ে অনেক রোমান্টিকতা থাকলেও , ট্রাডিশনাল পলিটিক্স এর টার্ফ ওয়ারে কিংবা টেরিটোরিয়াল ফাইটিং এ জুলাই ঘোষণা কন্ট্রোভার্সিয়াল হয়ে যাবে।
আর তাছাড়া এই জুলাই ঘোষণা একটা আরবান মিডল ক্লাসের আইডিয়া। এটার মানে কি, এটা না থাকলে কি হবে সেটার কোন ক্লিয়ার কনসেপ্ট এটার মার্কেটিং যারা করছেন তারাও জানেন না।
একারণে, এই মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে যদি বিএনপি সহ আরো অনেক দল না আসে , তাহলে যেইটা হবে সেটা হচ্ছে, দেশ তার পার্মানেন্ট সেটেলমেন্ট বা বন্দোবস্ত যেগুলো আছে সেগুলোতেই ডিফল্ট সেটিং এ চলে যাবে ।
কি সেই ডিফল্ট সেটিং ?
ঝামেলা বেশি লাগলে ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রাকচার ওয়ালা বড় রাজনৈতিক দল, সিভিল বুরুক্রেসি , সিভিল সোসাইটি , মিডিয়া , বিজনেস কমুইনিটি , এবং দেশের মিলিটারি যা চাইবে তাই হবে।
আপনারা যারা জুলাই নিয়ে খেলবেন , এই ডিফল্ট সেটআপ ভালো মতো বুঝে খেলতে নামবেন।