
রাঙামাটি শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আজ শুক্রবার বিকেলে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর বিকেলে এটি ভাঙা শুরু হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি অপসারণের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বেলা তিনটার দিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে শহরের ভেদভেদী বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর উপজেলা প্রশাসনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচি থেকে পাশে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ৩১ ফুট উঁচু ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক দিয়ে ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করা হয়। এ সময় আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।
বিশাল ভাস্কর্যটির মাথা আগে থেকেই ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। এরপর শ্রমিকেরা বেদিতে দাঁড়িয়ে ভাস্কর্যের পায়ের কাছে আঘাত করা শুরু করেন। বড় বড় হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টার পর আনা হয় ড্রিল মেশিন ও বৈদ্যুতিক কাটার। দুটি যন্ত্রের সাহায্যে চলতে থাকে ভাস্কর্য ধ্বংসের কাজ। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ভাস্কর্যের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভাঙা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে অর্ধশত তরুণ ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ১০ থেকে ১৫ জন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করছেন। মূর্তি ভাঙার দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করছিলেন শত শত মানুষ। কোনো বাধা ছাড়াই এভাবে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে রাঙামাটি শহরের সদর উপজেলা পরিষদের সামনে ৩১ ফুট উঁচু ও ১২ ফুট প্রশস্ত ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মূর্তিটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা প্রথম আলোকে বলেন, ভাস্কর্য ভাঙার বিষয়ে তাঁরা জানার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছেন।
জানতে চেয়ে রাঙামাটির পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। এ জন্য তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।