Image description
জিয়াউল হক স্বপন ওরফে জিএস স্বপন। গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে অবৈধ সুবিধা নেওয়ার বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হাসিনার পতনের পর ভোল পালটে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। দলীয় পদ না থাকলেও সাবেক নেতার পরিচয় দিয়েই প্রকাশ্যে করে যাচ্ছেন চাঁদাবাজি। এলাকার ব্যবসায়ী শ্রেণী, শিক্ষক, বাড়িওয়ালাদের টার্গেট করে ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করছেন। চাহিদা মাফিক চাঁদা না পেলেই টার্গেট ব্যাক্তিকে করছেন মামলার আসামি। তার মামলা বাণিজ্য এখন টঙ্গী-গাজীপুরের মানুষের কাছে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। দলীয় নেতারাও স্বপনের ওপর বিরক্ত; তার কারণে দলের ইমেজ চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্র বলেছে, জিয়াউল হক স্বপন এককালে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। এখনও নামের সঙ্গে জিএস শব্দ জুড়ে চলছেন তিনি। বর্তমানে কোনো দলীয় পদে নেই। তিনি টঙ্গীর লেদুমোল্লা রোড এলাকার কফিল উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে। পেশায় আইনজীবী। আইন পেশার সুবাদে বাদীদের জিম্মি করে মামলা বাণিজ্য করেন। দলীয় পদে না থাকলেও তিনি এলাকায় আধিপত্য দেখান বিএনপির পরিচয়েই। জিয়াউল হক স্বপনের চাঁদা দাবি, মামলা বাণিজ্য ও হুমকি-ধমকির ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় দুটি মামলা ও একাধিক লিখিত অভিযোগ রয়েছে।

ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে দেশের পটপরিবর্তনের পর বিএনপি নামধারী স্বপন এলাকার লোকজনের নামে ‘টার্গেট মামলা’কে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। মোটা অংকের চাঁদা, দামি মোবাইল ফোন, ব্যবসায় অংশীদার করে নেওয়ার দাবি করে হুমকি দিচ্ছেন। টার্গেট ব্যক্তি চাঁদা না দিলে হুমকি, ধমকি এমনকি অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করছেন। স্বপনের এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকমীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। টঙ্গীর বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

 

স্বপনের মামলা বাণিজ্য এখন টঙ্গী-গাজীপুরের মানুষের কাছে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। দলীয় নেতারাও স্বপনের ওপর বিরক্ত; তার কারণে দলের ইমেজ চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা

 


 

স্বপনের টার্গেট মামলা থেকে বাদ যাচ্ছেন না স্কুল ছাত্র, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, এলাকাবাসী এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীরাও। 

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক শিক্ষার্থীর চোখে গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগে করা মামলা নিয়ে স্বপন বাণিজ্য শুরু করেন। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও চাঁদা না পাওয়ায় আইনজীবী হিসেবে তিনি অনেকের নাম আসামির তালিকায় ঠুকে দিয়েছেন। এখন মামলা থেকে আসামিদের নাম বাদ দিতে চাঁদা দাবি করছেন। এভাবে গত ৭-৮ মাসে তিনি প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়ে গেছেন। 

সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় শিলা আক্তার নামের এক নারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২৭১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার ১৬৫ নম্বর আসামি গাজীপুর মহানগরীর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমান সদস্য মুরাদ হোসেন বকুল। তিনি অভিযোগ করেন, জিয়াউল হক ওরফে জি এস স্বপন লোক মারফত তার কাছে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে তাকে মামলায় ফাঁসিয়েছেন।

মামলার আসামিদের চেনেন কি না, এমন প্রশ্নে বাদী শিলা আক্তার বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বপন (জিয়াউল হক) ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।’

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে স্বপন পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতেন। বেনজিরের সঙ্গে তার একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া যায়। এছাড়া তাকে প্রায়ই দেখা যেত গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বাসায়। 


উত্তরা পূর্ব থানায় ৭ এপ্রিল করা হত্যাচেষ্টা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে এ মামলার ১৬৫ নম্বর আসামি মুরাদ হোসেন বকুল বলেন, আমি পেশায় দলিল লেখক এবং টঙ্গীর দলিল লেখক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। কয়েক মাস আগে আমি স্থানীয় ব্যবসায়ী রশিদ মোল্লার জমিসংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে দিই। এর জেরে স্বপন আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় গত এপ্রিলে আমাকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলাটি করান। টাকা দিলে মামলা থেকে আমার নাম বাদ দেবেন বলে লোক মারফত জানিয়েছেন।

এই মামলায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন—আফজাল, মতি, লিটু, আমির হোসেন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

 

মামলার আসামিদের চেনেন কি না, এমন প্রশ্নে বাদী শিলা আক্তার বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বপন (জিয়াউল হক) ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন’

 


 

টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহম্মেদ সুমন এ বিষয়ে বলেন, মুরাদ হোসেন বকুল বহু আগে থেকেই বিএনপি করেন। ২০২৩ সালে গঠন করা টঙ্গীর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ৫১ সদস্যের কমিটিতে ‘সদস্য’ পদে রয়েছেন। আগের কমিটিতে তিনি সহ সভাপতি পদে ছিলেন। শুধু মুরাদ হোসেনই নন, চাঁদা না দেওয়ায় জিয়াউল অনেককেই মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সুমন সরকার আরও বলেন, স্বপন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এখন সে আর বিএনপিতে নেই। কিন্তু এখন কার আশ্রয় প্রশ্রয়ে এসব করছে তা তদন্ত হওয়া উচিত।

 

স্বপন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এখন সে আর বিএনপিতে নেই। কিন্তু এখন কার আশ্রয় প্রশ্রয়ে এসব করছে তা তদন্ত হওয়া উচিত

-টঙ্গী পূর্ব বিএনপির সভাপতি সুমন সরকার

 

 


 

আইফোন ‘না পাওয়ায়’ মামলার আসামি ঠিকাদার

টঙ্গীর দত্তপাড়া হাসান লেনের বাসিন্দা কবির হোসেন পেশায় ঠিকাদার। তিনি অভিযোগ করেন, ৫ জুলাই স্থানীয় একটি মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কৌশলে তার আইফোন ও নগদ ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন জিয়াউল হক স্বপন। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কবির। পরে বাধ্য হয়ে শুধু মুঠোফোন ফেরত দেন জিয়াউল।

 

টঙ্গীর দত্তপাড়া হাসান লেনের বাসিন্দা কবির হোসেন পেশায় ঠিকাদার। তিনি অভিযোগ করেন, ৫ জুলাই স্থানীয় একটি মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কৌশলে তার আইফোন ও নগদ ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন জিয়াউল হক স্বপন। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কবির। পরে বাধ্য হয়ে শুধু মুঠোফোন ফেরত দেন স্বপন

 


 

এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে কবিরকে ফোন করেন স্বপন। আগের ঘটনার জেরে হুমকি দিয়ে নতুন একটি আইফোন কিনে দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে মামলায় আসামি (১৫৬ নম্বর) করা হয় বলে অভিযোগ কবিরের। এ ঘটনায় মুঠোফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ডেও স্বপনকে হুমকি দিতে শোনা গেছে। কবির হোসেন বলেন, বাদী তাকে চেনেন না, দেখেনওনি। জিয়াউল হাসানকে আইফোন কিনে না দেওয়ায় তিনি কৌশলে মামলায় নাম দিয়েছেন।

বাবা চাঁদা না দেওয়ায় ১১ বছরের শিশুও আসামি

কবির হোসেনের মুঠোফোন ও টাকা নেওয়ার পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসা বৈঠক হয়েছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দত্তপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. হামিদ মোল্লা ওই সালিশ বৈঠকে স্বপনকে ‘চোর’ আখ্যা দেন। এর জেরে গত ১০ আগস্ট জিয়াউল লোকজন নিয়ে হামিদ মোল্লার বাড়িতে হামলা চালান। ৩০ আগস্ট টঙ্গী পূর্ব থানায় জিডি করেন হামিদ মোল্লার মেয়ে তাবাসসুম।

হামিদ মোল্লা বলেন, বিচারে চোর বলায় এবং চাহিদামাফিক চাঁদা না দেওয়ায় স্বপন তাদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন। পরে থানায় জিডি করলে তিনি, তার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছরের ছেলে সাদ মোল্লা ও জামাতার নাম মামলার তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন স্বপন।

‘চাঁদা না দেওয়ায়’ আসামি স্কুল-কলেজ শিক্ষকরা

টঙ্গী ও গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও স্বপনের মামলাবাজির শিকার। টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হানিফ উদ্দিন, পরিদর্শক আবু জাফর আহম্মেদ, টঙ্গীর সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, ক্রীড়া শিক্ষক মোস্তফা কামাল, গাছা বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মনির হোসেন প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছেন, চাঁদা না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করিয়েছেন স্বপন।

 

স্বপনের নামে দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযানও চালানো হয়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন

জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) এন এম নাসিরুদ্দিন 

 

 


 

এসব শিক্ষকের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর তাদের ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করেন স্বপন। না দেওয়ায় তাদের আসামি করা হয়।

টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গালর্স কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. হানিফ উদ্দিন বলেন, ‘১৬-১৭ অক্টোবর জিয়াউল হাসান স্বপন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে একজন লোক পাঠান। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি প্রচন্ড ক্ষেপে যান। এর জেরে অন্যান্য শিক্ষকের সঙ্গে আমাকেও মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।’

টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকার রড ব্যবসায়ী মো. কামাল ও তার ছেলে মাসুদ রানা এবং জাপান স্টিল নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. নূরানীও অভিযোগ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া মামলায় আসামি করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন স্বপন। জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিয়ে ‘মামলার বাদী আসামিদের চেনেন না’ উল্লেখ করে হলফনামা করে আদালতে পেশ করেন তিনি। এছাড়া ব্যবসায়ী হবি মল্লিক অভিযোগ করেছেন যে, স্বপন তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন। এরপরও ৫ টি মামলার আসামি করিয়েছেন। দত্তপাড়ার বাসিন্দা রশিদ মোল্লা ও হাজি বিল্লালও অভিযোগ করেছেন যে, স্বপন তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছেন। রশিদ মোল্লাকে ৮ মামলার আসামি করিয়েছেন।

এছাড়া ব্যবসায়ী আবদুল জলিল ওরফে অরুণ ও আবদুস সালামও অভিযোগ করেছেন যে, স্বপন চাঁদা না পেয়ে তাদেরকেও মামলার আসামি করিয়েছেন।

মামলার বাদী চেনেন না আসামিদের

গত ৪ আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ হন টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ঘটনায় ১৩ নভেম্বর ২০৩ জনের নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন তার বাবা আসান উল্লাহ। আসামিদের নামগুলো কে দিয়েছেন, জানতে চাইলে বাদী মো. আসান উল্লাহ বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না।’ তবে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসান উল্লাহ বলেছিলেন, পুরো মামলাটি স্বপন ভাই (জিয়াউল হাসান) করিয়েছেন। আর মামলায় এতো নাম দেওয়া হবে, তা তিনি জানতেন না।

গত ৭ এপ্রিলের উত্তরা পূর্ব থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলার অপর বাদি শিলা আক্তার যাদের আসামী করেছেন তাদের চেনেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, এ বিষয়ে স্বপন ভাইকে জিজ্ঞেস করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়াউল হাসান স্বপন মুঠোফোনে বলেন, আমি কারো বিরুদ্ধে মামলা দিইনি। যারা বিগত দিনে আওয়ামী লীগ করেছে বা দোসর ছিল কেবল তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। আর এসব মামলার বাদীও আমি না বা আইনজীবীও আমি না। এছাড়া প্রশাসনকে ভূল বুজিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিচ্ছে। এসব মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি সাধারণ মানুষকে কোনোদিন হয়রানি করি নাই, করবোও না।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, জিয়াউল হক স্বপনের নামে থানায় চাঁদা দাবি ও হুমকি-ধমকির ঘটনায় মামলা রয়েছে। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) দক্ষিণ এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, স্বপনের নামে দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযানও চালানো হয়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘স্বপনের (জিয়াউল হক) এসব অনিয়মের কথা আমরাও শুনেছি। অনেকে অভিযোগও করেছেন। সে একসময় দলীয় পদ পদবীতে ছিল, এখন তার কোন পদ নেই। বিএনপিতে তার মতো লক্ষ কোটি সমর্থক। সমর্থকদের অপকর্মের দায় তো সংগঠন নিতে পারে না। স্বপন কমিটিতে না থাকায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে, আমরা আদালতে সবাইকে বলে দিয়েছি, যেন তার এ ধরনের কোনো মামলা এন্ট্রি করা না হয়।’

 

স্বপনের এসব অনিয়মের কথা আমরাও শুনেছি। অনেকে অভিযোগও করেছেন। সে একসময় দলীয় পদ পদবীতে ছিল, এখন তার কোনো পদ নেই। বিএনপিতে তার মতো লক্ষ কোটি সমর্থক। সমর্থকদের অপকর্মের দায় তো সংগঠন নিতে পারে না। স্বপন কমিটিতে না থাকায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে, আমরা আদালতে সবাইকে বলে দিয়েছি, যেন তার এ ধরনের কোনো মামলা এন্ট্রি করা না হয়

 

মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার

 


 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, যারা এ ধরণের কাজ করছে তারা শুধু নিজেরই নয় বরং দলেরও ক্ষতি করছেন। বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও লুটেরাদের স্থান নেই।