Image description

পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো: তোফাজ্জল হোসেনসহ পাঁচ সচিবকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম ৷একইসাথে তাদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করাসহ পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। এর গনমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে সই করেছেন সংগঠনটির সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার৷

সভায় যে ১৪ টি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে---

১. সরকার, বিভিন্ন কমিশন/সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নিয়োগ/প্রদায়নকৃত বিদেশী নাগরিকদের নিয়োগ/পদায়ন বাতিল চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে রিট দায়ের।

২. নাজমুল আহসান (৫৯৬৩), সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া (৫৭০৪), সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়; জাহেদা পারভীন (৬৩০৮), সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ; মোঃ মফিদুর রহমান (৬২৫৪), সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, সচিব, (চলতি দায়িত্ব), মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়'কে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং তাদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা। পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা

৩. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত বিতর্কিত কর্মকর্তা ও প্রশাসনে এখনও কর্মরত স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাই রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। বিতর্কিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিল ও স্বৈরাচারের দোসর কর্মকর্তাদের অপসারণ করার দাবিতে আগামী ১২ মে ২০২৫ তারিখ মঙ্গলবার সকাল ৮:৪৫ মিনিটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ফোরামের সদস্যগণ উপস্থিত হবেন। আগামী ১৫ মে ২০২৫ তারিখে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচী। মিছিলটি সকাল ১১.০০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে দৈনিক বাংলা মোড়-জিরো পয়েন্ট-রেলভবন হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবে শেষ হবে।

৪. সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারি সচিব (নন-ক্যাডার) এর ফিডার পদে পদোন্নতি যোগ্য প্রশাসনিক/ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের মধ্য হতে জেষ্ঠতার ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩০০ জনকে সুপার নিউমারি পদসৃষ্টি পূর্বক সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি প্রদানে জোরালো ভূমিকা পালন।

৫. সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সকল নন-ক্যাডার কর্মচারীদের রেশন সুবিধা চালু করণে পদক্ষেপ গ্রহণ।

৬. বিধিবর্হিভূতভাবে গঠিত জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি অবিলম্বে বাতিল করা না হলে পররর্তিতে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার প্রস্তুতি গ্রহণ।

৭. ৫ আগস্ট, ২০২৪ এর পূর্বে পদোন্নতি প্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ-আওয়ামী দোসর যুগ্ম সচিব/অতিরিক্ত সচিবদের পদোন্নতি দেয়া এবং তাদের কাউকে সচিব/সংস্থার প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান নিষিদ্ধ করার দাবীতে কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা।

৮. ৫ আগস্ট পর ওএসডি অথবা অপসারণের পর আবারও কোন কোন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তা/পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯. জুলাই গণআন্দোলনের পর ৫০০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ১৩০ জন সিনিয়র পুলিশ অফিসারকে বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করা। এইসব কর্মকর্তা ঢাকায় একত্রে অবস্থান করে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদেরকে ক্ষেতমতে বাধ্যতামূলক অবসর এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পদায়নের ব্যবস্থা করা।

১০. জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত জনপ্রশাসন সচিব, যুগ্ম সচিব আলী আজম ও ড. জিয়া সহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে ৩জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা।

১১. প্রশাসনে উচ্চ পর্যায়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার চাকুরীকালীন সময়ে তাঁর কর্মকান্ড, বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ইত্যাদি পর্যালোচনা এবং নির্ধারিত বেঞ্চ মার্ক আছে কি-না যাচাই করা ইত্যাদি। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার এ সমস্ত বিষয় সঠিক থাকলে কোন গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিবেচনা করা সমাচিন নয়। ডিজিএফআই এর প্রতিবেদন সিভিল অফিসারের বেলায় নিতান্তই অবান্তর। কোন বিশেষ ক্ষেত্রে যদি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে এনএস আই এর প্রতিবেদন চাইলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যেন সামাজিকভাবে হেয় না হয় বা কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। বর্তমান এনএসআই অধিকাংশ আওয়ামী অনুগত ও নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত। সে কারণে এনএসআই পুর্নগঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই সংস্থার প্রতিবেদন চাওয়া থেকে বিরত থাকা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি দেখা গেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণীত ২০২২-২০২৩ সালের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ২৪ব্যাচের যুগ্ম-সচিব পদোন্নতি কালে ব্যাচের সর্বশেষ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হলেও ১৮৫ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। বঞ্চিত এ সব কর্মকর্তাদের বিষয়টি রিভিউ করে অবিলম্বে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করা।

১২. ইতোমধ্যে যেসব জেলা প্রশাসক যুগ্ম-সচিব হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছে তাদের স্থলে ২৫ ও ২৭ ব্যাচের নিরপেক্ষ এবং দক্ষ কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন নিশ্চিত করা। কোনভাবেই আওয়ামী দোসর কাউকে জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

১৩. জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা রক্ষার নামে অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করে কর্মচারীদের হয়রানী করা এবং কোন প্রকার কারণ না দর্শিয়ে ৮ দিনে চাকুরীচ্যুত করা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার পরিপন্থি "কালো আইন" তৈরী করা থেকে সরকারকে বিরত রাখার লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকা।

১৪. ফোরামের সকল সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং ফোরামের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আন্দোলনে সবার সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।