
চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল ২০৩০ সালে চালুর আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, সেখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। আর এর জন্য বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা অনেক বেশি। বে-টার্মিনাল মাতারবাড়ি সময়মতো অপারেশনে এনে বন্দরের সক্ষমতা ৫/৬ গুণ বাড়াতে পারলেও তা ভিয়েতনামের ধারে কাছে যাবে না।
তাই এসব সীমাবদ্ধতাকে মাথায় নিয়ে সক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করতেই চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালগুলোতে গ্লোবাল অপারেটর প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এতে একদিকে যেমন সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যাবে।
অন্যদিকে ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ সামলানো সহজ হবে বলে জানিয়েছেন বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী মাহমুদ বিন হারুণ।
তিনি বলেন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে নিরাপত্তার কথা তোলা হচ্ছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ডিপি ওয়ার্ল্ড নামে যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের আরো ৬০ থেকে ৭০টি দেশের বন্দর পরিচালনা করছে।
কোন দেশ নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি মনে করছে না। কিন্তু আমরা এই ইস্যুটাকে বার বার সামনে আনছি।
এছাড়া আমাদের নৌবাহিনীর যথেষ্ট সক্ষমতা আছে এ ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করার। সমুদ্রসীমা বন্দরের নিরাপত্তার বিষয়টি তারাই দেখবে।
এছাড়া লালদিয়ার চড়ে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য নেদারল্যাণ্ডের প্রতিষ্ঠান এপিএমের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এটি বাস্তবায়িত হলে কমপক্ষে ৮শ মিলিয়ন ডলার এফডিআই বা সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
এতে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে। যা জাতীয় অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনবে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মনিরুজ্জামানসহ চট্টগ্রাম বন্দরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বন্দর চেয়ারম্যান এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটাই হবে আসল সমুদ্র বন্দর।
এখনি ১৩ মিটারের জাহাজ এসেছে পাশে। এটা যুগান্তকারী উন্নয়ন হবে। এখানে চারটা টার্মিনাল করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতোমধ্যে আমাদের তিনটা টার্মিনালের অনুমোদন আছে। টার্মিনাল ওয়ান যেটা পিএসএ সিঙ্গাপুর করবে, টার্মিনাল টু যেটা ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে এবং টার্মিনাল থ্রি আমরা ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে করব, যারা কম্পিট করে আসতে পারে।
আরেকটা টার্মিনাল আমরা এনার্জি টার্মিনাল প্ল্যানে রেখেছি। আমাদের যে ক্যাপাসিটি, প্রায় ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার এখানে খুব সহজে হ্যান্ডেল করা যাবে।
এটা হয়ত ৪ দশমিক ৫ এর উপরেও চলে যাবে, যদি আমরা এখানে আরো অফডক অন্য ফ্যাসিলিটিসগুলো করতে পারি। গ্রাউন্ড ব্রেকিং এই বছরের শেষের দিকে হবে। ২০৩১ এর মধ্যে আমরা আশা করছি বে-টার্মিনাল অপারেশনে যাবে বলেও জানান তিনি।