
ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে। ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও থানার ওসি অভিযোগের তদন্ত না করেই মামলাটি রুজু করেছেন।
অথচ একই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার দায়ের করা অভিযোগ থানার ওসি মামলা হিসেবে রুজু না করে সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করেছেন।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়ার এমন কর্মকাণ্ডে সর্বত্র ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে নাটকীয় ওই মামলায় বরিশালে গৌরনদীর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। বিচারক ওই মামলায় জেলার গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
সূত্রমতে, গত ৬ মে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী অফিস সহকারীর কক্ষে বসে তিনজন ইউপি সদস্যের ওপর হামলা চালায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ইউপি সদস্যদের ওপর প্রকাশ্যে হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে।
এতে হামলাকারীদের স্পষ্টভাবে দেখা গেলেও হামলায় আহত ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন হিরার থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধাকে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি ইউনুস মিয়া লিখিত অভিযোগের তদন্ত না করেই পাঁচটি ধারায় মামলাটি এজাহারভুক্ত করেন (যার নম্বর-১০, তারিখ: ৭ মে ২০২৫)। তদন্ত ছাড়াই মামলা রুজু করার বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে পরলে ওসির পক্ষপাতমূলক আচরণে জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা বলেন, হামলার বিষয়টি আমি ইউনিয়ন পরিষদে বসে শুনেছি। আর কারা কি কারণে হামলা চালিয়েছে সে বিষয়টিও আমার জানা নেই। সেখানে থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত না করেই সামাজিকভাবে হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যে অভিযোগের মামলাটি এজাহারভুক্ত করেছেন।
অপরদিকে ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন হিরার দায়ের করা মামলার ৩ নম্বর আসামি উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফুয়াদ হোসেন এ্যানি বলেন, ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন হিরা ও তার সহযোগীরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্থানীয় দানব হিসেবে খ্যাত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমানের নির্দেশে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কর গাজীর একটি চোখ উপরে ফেলেছে।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে (হিরা) আত্মগোপনে রয়েছে। হঠাৎ করে গত ৬ মে বিকেলে মাক্স পড়া অবস্থায় হিরাকে উপজেলা পরিষদের একটি কক্ষে দেখে কয়েকজন যুবক তাকে ধাওয়া করে। ওইসময় পরে গিয়ে তার হাত ও পা কেটেছে।
পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, ইউপি সদস্যের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, একই ঘটনায় দুইটি অভিযোগ না নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করা হয়েছে। এটা দোষের কিছু নয়।