
চট্টগ্রাম র্যাব কার্যালয়ের এএসপি পলাশ সাহার আত্মহত্যার কারণ জানিয়েছেন তার মেজো ভাই নন্দলাল সাহা। তিনি জানান, পলাশ সাহার গায়ে হাত তোলেন তার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা। এর জন্য ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করে।
বুধবার চট্টগ্রাম র্যাব কার্যালয়ের নিজ অফিস থেকে পলাশ সাহার লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত পলাশ সাহার লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তিনি র্যাব-৭ এ কর্মরত ছিলেন। পলাশ সাহা গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের মৃত বিনয় কৃষ্ণ সাহার ছেলে।
এএসপি পলাশ সাহার মেজো ভাই নন্দ লাল সাহা বলেন, ২ বছর আগে ফরিদপুরের চৌধুরীপাড়ায় পলাশের বিয়ে হয়। বিয়ের ৬-৭ মাস পর থেকে তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। প্রতিদিন কিছু না কিছু নিয়ে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা পরিবারে ঝামেলা করত। আমার মা আরতি সাহা পলাশের সঙ্গে চট্টগ্রামে থাকত; এটা পলাশের স্ত্রী মেনে নিতে পারত না। সে সব সময় মাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য পলাশকে চাপ প্রয়োগ করত। পলাশ কিছুতেই মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে চাইত না। সে মা ও তার স্ত্রী দুজনকেই ভালোবাসতো।
তিনি বলেন, বুধবার সকালে সামান্য বিষয় নিয়ে আমার মা আরতি সাহা ও ভাই পলাশ সাহার গায়ে হাত তোলে সুস্মিতা সাহা। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি আমার ভাই। আর এ কারণেই আমার ভাই পলাশ সাহা আত্মহত্যা করেছে বলে আমাদের ধারণা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে কর্মরত স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহা অফিস কক্ষে নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার কক্ষ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, র্যাব চান্দগাঁও কার্যালয়ের নিজ কক্ষ থেকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। র্যাব কর্মকর্তা পলাশ তার নিজের ব্যবহৃত অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন বলে জানান ওসি।
এদিকে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, এএসপি পলাশ সাহার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তিনি কিভাবে মারা গেছেন- সেই বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নই। লাশ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
লাশের পাশ থেকে উদ্ধার করা চিরকুটে লেখা আছে- ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ- কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কোঅর্ডিনেট করে।’