Image description

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর আসন্ন ঢাকা সফর এবং তার সঙ্গে শতাধিক বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি দলের আগমন ঘিরে গুঞ্জন উঠেছে, বাংলাদেশ কি ক্রমেই চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছে? এই প্রেক্ষাপটে জিওপলিটিক্যাল শিফট এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠলেও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী স্পষ্ট করেছেন দেশের অবস্থান।

এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকেছে। আমরা কোনো নির্দিষ্ট দেশের প্রতি চরমভাবে ঝুঁকে পড়ি না। যেই দেশ থেকেই বিনিয়োগ আসুক—চীন, আমেরিকা বা অন্য কেউ—আমরা তা স্বাগত জানাব। আমাদের প্রধান শক্তি হলো তরুণ জনগোষ্ঠী, আর তাদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরিই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী সরকারগুলোর জন্য কর্মসংস্থান বড় ইস্যু হবে। চাইনিজ বিনিয়োগকারীরা যদি এসে এখানে শিল্প স্থাপন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন, তাহলে তা হবে চমৎকার একটি অগ্রগতি।”

 

তবে আশিক চৌধুরী সতর্ক করেন তথাকথিত বিনিয়োগ ও প্রকৃত বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে। “বহুদিন ধরেই আমরা দেখছি, অনেক চীনা নির্মাণ কোম্পানি আমাদের দেশে কাজ করছে। প্রকল্পে ব্যবহৃত অর্থ চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এনে আবার তাদেরকেই দিয়ে দিচ্ছি। এতে আমাদের অর্থনীতি থেকে টাকা বের হয়ে যাচ্ছে।”

 

তিনি বলেন, “এখন আমরা চাচ্ছি প্রকৃত বিনিয়োগ, যেখানে কোনো চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে একটি উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপন করবে, যা স্থায়ীভাবে থাকবে এবং কর্মসংস্থান তৈরি করবে। এই ধরণের গঠনমূলক বিনিয়োগকেই আমরা অগ্রাধিকার দিতে চাই।”

বিডা চেয়ারম্যান জানান, এবার চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী যেসব বিনিয়োগকারী নিয়ে আসছেন, তাদের মধ্যে নির্মাণ কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। বরং থাকছে টেক্সটাইল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যালসহ এমন প্রতিষ্ঠান, যারা বাংলাদেশে প্রকৃত উৎপাদন করতে চায়।

এই শিফটই হতে পারে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নতুন মাত্রা—বিনিয়োগের নামে ঋণ নয়, বরং টেকসই শিল্প গড়ে কর্মসংস্থানের বাস্তব ভিত্তি।