
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সমসাময়িক বিষয়ে প্রায়ই নিজের মতামত তুলে ধরেন। লেখালেখি ও সামাজিক মাধ্যমে সবর তিনি। প্রেস উইং কর্মকর্তাদের জন্য মোবাইল বরাদ্দ, দেশের অপচয়, দুর্নীতি, বিলাসিতা ও অপ্রয়োজনে সরকারি অর্থ ব্যয় ও প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন এই সাংবাদিক।
সোমবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমরা যখন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ে কাজ করতাম, তখন সেখানে সিনিয়র প্রেস অফিসারদের প্রাধিকারের মধ্যে সেল ফোনও ছিল। যতদূর মনে পড়ে, উইংয়ে মোট চারটি সেল ফোন বরাদ্দ ছিল। তখন আইফোন উদ্ভাবিত হয়নি। আমি পেয়েছিলাম একটি ব্ল্যাকবেরি ফোন। সম্ভবত: দুই হাজার টাকার সিলিং ছিল ফোন বিলের। এর বেশি হলে নিজের পকেট থেকে দিতে হতো। কেবল প্রেস সচিবের নামে বরাদ্দ ফোনটির সব বিল সরকার দিত। সেই ফোনটি রোমিং ছিল। বিদেশে গেলেও কথা বলা যেত। এই ফোনগুলো মূলত সরকারি কাজের জন্য বরাদ্দ হতো। চাকরি শেষে ফেরত দিতে হত। প্রধানমন্ত্রীর অফিসে সেল ফোনের প্রাধিকার মুখ্য সচিবই নির্ধারণ করতে পারেন।
তিনি লেখেন, আমার জানা মতে শেখ হাসিনার আমলেই প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ে আইফোন সরবরাহ করা হয়। তবে সে ফোন ফিরিয়ে দিতে হয় চাকরি শেষে। সেল ফোনের প্রাধিকার আছে এমন অন্য সরকারি দায়িত্বশীলেরা মাথাপিছু এককালীন ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান সেল ফোন কেনার জন্য। এ টাকা বা ফোন তাদের আর ফেরত দিতে হয় না কখনো। তাদের জন্য বরাদ্দ করা সেল ফোনের সব বিলই সরকার পরিশোধ করে।
তিনি আরও লেখেন, এখন সরকার-প্রধানের প্রেস অনুবিভাগের দায়িত্ব-কর্তব্য, কাজের পরিধি ও প্রযুক্তি নির্ভরতা অনেক বেশি বেড়েছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে এই প্রযুক্তির এক ধরণের প্রতিযোগিতাও আছে। কাজেই সরকারপ্রধানের প্রেস উইংয়ে এখনকার প্রেস অফিসারদের জন্য আইফোন বরাদ্দ খুব বেশি বাড়াবাড়ি বলে আমার মনে হয় না। রাষ্ট্রীয় কর্তব্য পালনে এটা দরকারিই মনে করি। এখনকার প্রেস অফিসারদের মেইনস্ট্রিম ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াও হ্যান্ডেল করতে হয়। কাজেই কেবল সেল ফোন নয়, তাদের জন্য ল্যাপটপ ও ট্যাবও বরাদ্দ করা উচিত। আমাদের নামে অবশ্য কেবল অফিসে মাথাপিছু একটা করে ডেক্সটপ বরাদ্দ ছিল।
তিনি লেখেন, আমাদের দেশে অপচয়, দুর্নীতি, বিলাস ও অপ্রয়োজনে সরকারি অর্থ ব্যয়ের কোনো লেখাজোখা নেই। ওদিকে চোখ দিলে অনেক অর্থ সাশ্রয় সম্ভব। কিন্তু ব্যয় সংকোচনের নামে প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা আহাম্মকি মাত্র।
মারুফ কামাল খান পোস্টের শেষ দিকে লেখেন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে এটা অনুধাবন করি যে, প্রাধিকার ও সুযোগ-সুবিধা না বাড়ালে এসব কাজে মেধাবী ও সৎ মানুষেরা আসতে উৎসাহী হবে না। যারা ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করবে তেমন চোরচোট্টা, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অযোগ্য লোকের মেলা বসে যাবে।