Image description

অবৈধ দখলকারীদের উদ্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে চাই। যেখানে মানুষ বাসযোগ্য অবস্থায় বসবাস করতে পারবে। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে যে যতই প্রভাবশালী মহল বা শক্তিশালী মহল হোক না কেন, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা যাকে পাব, তাকে উচ্ছেদ করব।’

আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় রাজউকের নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের (জোন–৮) নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ হুঁশিয়ারি দেন রাজউক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা তো অতীতে ফিরে যেতে পারব না, যতটুকু অতীতে ফিরে যাওয়া যায়। বর্তমানে যত নির্মাণাধীন ভবন আছে, সেগুলোয় আমরা জিরো টলারেন্স। নিয়মনীতির কোনো ব্যত্যয় ঘটালে কোনো ছাড় নেই।’ তিনি বলেন, ‘যে ভবনগুলো আগে হয়েছে, সেগুলো আমরা চিন্তা করব কী করা যায়। সেগুলোর একটা নীতিমালা হচ্ছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য যুগ্ম সচিব মো. আলম মোস্তফা, হারুন–অর–রশীদ, প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অথরাইজ অফিসার এফ আর আশিক আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক মেহেদী প্রমুখ।

রাজউকের কাছে কোনো প্রভাবশালী মহল ও শক্তিশালী মহল বলতে কিছু নেই দাবি করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যাকে যেভাবে পাব, সেটা আমরা উচ্ছেদ করব। একটা জলাশয় দখল করে ১০ তলা ভবন হয়ে গেছে, সেটি আমাদের সর্বোচ্চ মহলের অনুমোদন নেব, নীতিমালা করতেছি। কিন্তু যে খাল–বিলগুলো উদ্ধার করা সম্ভব, আমরা করব। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরিবেশ ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে যতটুকু সম্ভব খাল–বিল এগুলো উদ্ধার করার চেষ্টা করব।’

নারায়ণগঞ্জে অবৈধ দখল পরিস্থিতি তুলে ধরে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যেভাবে নদী–নালা, খাল–বিল দখল হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। এটার জন্য রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ আমরা সবাই দায়ী, এলাকাবাসীও দায়ী। তাঁরাও সচেতন নন, জানেন না। আমি বাসযোগ্য রাজধানী দেখতে চাই, যেখানে মানুষ বাসযোগ্য অবস্থায় থাকতে পারবে।’

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান রাজউক চেয়ারম্যান। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে সব সংস্থা মিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরান ঢাকার ভবনগুলো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকায় যেটা আছে, সেটা অন্য ইস্যু। ওখানেও আমরা কাজ করছি। আপনারা পুরোনো ভবনগুলো ভেঙে ব্লক করে নিন। ব্লক করলে তাঁরা আমাদের কাছ থেকে প্রণোদনা পাবেন। ভবন নির্মাণ করতে গেলে তাঁরা আমাদের কাছ থেকে সাপোর্ট পাবেন।’

রাজধানীর ঢাকার যানজট নিরসনে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চান রাজউক চেয়ারম্যান। তিনি জানান, সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ, প্রশাসন ও রাজউক মিলে এবং জনগণকে নিয়ে কীভাবে রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা যায়, সুযোগ থাকলে সেটা করা হবে। এ জন্য রাস্তা প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানে বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে, সেটা আমরা ভাঙব না। হয়তো বিশাল বড় একটা জরিমানা করব। আমরা সংঘবদ্ধ করব, তাঁদের বোঝাব। যতটুকু সম্ভব আপনারা রাস্তাটা ছেড়ে দেন। আমরা এই কাজ করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘কারও বাড়িঘর ভাঙাটা আমাদের টার্গেট নয়। রাজউকের অনিয়মের সঙ্গে যাঁরাই জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সবাই, রাজউক প্রশাসন ও সেবা সংস্থা সবাই যেন আমরা নিয়মের মধ্যে থাকি। যাঁরা সেবাগ্রহীতা, তাঁরাও যেন নিয়মের মধ্যে থাকেন। তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।’