Image description

Shibly Azad( শিবলী আজাদ)

 
পড়াশোনা না করে নোটবই থেকে কপি করলে যা হয়, নারী কমিশন সেটাই করেছে। ইংরেজীতে লেখা জেন্ডার স্টাডিজের বইতে যা যা পেয়েছে, এ টু জি টুকলিফাই করেছে। তত্ত্ব হিশেবে প্রস্তাবগুলো খারাপ নয়। কিন্তু সেগুলো মার্কিনী সমাজের বাস্তবতা উদ্ভূত। বাংলাদেশ পশ্চাদপদ তৃতীয়বিশ্বের দেশ। আমেরিকার বাস্তবতা বাংলাদেশে চলানো সম্ভব নয়। চলবে না সেটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশের বাস্তবতার প্রেক্ষিতেই সংস্কার করতে হবে। বাস্তবতা না মানলে কোন সুপারিশই কাজেই আসবে না। সকালে দেয়া পোষ্টে সে কারণে কমিশনকে আমি সংস্কার কমিশন না বলে সৎকার কমিশন বলেছিলাম।
 
কমিশনের অবাস্তব সুপারিশের একটি উদাহরণ দেই। টেক্সট বই ছাড়া দুনিয়ার কোথাও--আমেরিকা ও ইউরোপেও--ম্যারিটাল রেইপ (Marital Rape) বিষয়ে আইন নেই। কারণটি খুব সোজা। দাম্পত্য জীবনের অন্তরঙ্গ মুহুর্তে কি ঘটেছিল--কে কাকে জোড় করেছিল--তার সাক্ষী থাকে না। সাক্ষ্য ছাড়া শুধু একতরফা নালিশের ভিত্তিতে বিচার কি করে হয়? আরও প্রশ্ন আছে। ম্যারিটাইল রেইপ স্বামী কর্তৃক এক তরফাই সংগঠিত হবে, ভাবাটা আইনের লজিকে খাটে না। শুধু পুরুষই দোষী হবে, নারী কখনো দোষী হতে পারে না, সেটা হয়? স্বামীকে ফাঁসাতেও বা রাগের মাথায়ও মিথ্যা অভিযোগ আনতে পারে।
 
সবচেয়ে বড় কথা, রাষ্ট্র কি পারিবারিক সম্পর্ক রেগুলেট করার ক্ষমতা রাখে, এই প্রশ্নও তোলা হয়। রাষ্ট্র যদি পারিবারিক একটি ইস্যু রেগুলেট করতে পারে, অন্যগুলো পারবে না কেন? তখন আবার ইন্ডিভিজুয়াল রাইটসের দোহাই দিয়ে আপত্তি করা কেন? আবার এটাও বলা হয়, নারী-পুরুষ সমান হলে, স্ত্রীর যদি অধিকার থাকে (আইনে যেটা স্বীকৃত) স্বামীর কেন থাকবে না? বিষয়টির এখনও তাত্ত্বিক সুরাহা হয়নি। সে কারণে ম্যারিটাইল রেইপ এখনও মার্কিনী দন্ডবিধির অন্তর্ভুক্ত নয়। আমেরিকায় যেখানে ডেট রেইপেইরই আইনগত ফয়সালা হয়নি (হওয়া সম্ভবত সম্ভবও নয়), সেখানে আরেক ডিগ্রী বড় ফ্যাসাদের সমাধান কি? অথচ, আইন কমিশন তাদের প্রস্তাবে এটাও আইনের আওতায় আনতে বলেছে।
 
মজাটা হচ্ছে, কমিশনের দৃষ্টিতে নারীর বিপক্ষে যায় ধর্মীয় সকল আইন বাতিল করতে সুপারিশ করেছে। কিন্তু নারীর পক্ষে যায় ধর্মীয় আইন বাতিলের সুপারিশ করেনি।পুরুষের যৌতুক নেয়া নিষিদ্ধ করার কথা বলেছে। খুব ভাল কথা। মেয়েরা যে দেনমোহর নেয়--পশ্চিমা আইনের চোখে যা শতভাগ যৌতুকের উদাহরণ--সেটা বাতিলের কথা বলেনি।
 
একঝলক চোখ বুলিয়ে রিপোর্টে আমি অন্তত ডজন খানেক ইনকনসিসটেন্সি পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে, কমিশনের ম্যাডামরা টাকাটা নিয়ে রিপোর্টে নিজের নামটা বসিয়েছে। আর বাস্তবে তাদেরই অল্পবয়সী আন্ডারগ্র্যাড কোন ছাত্রীকে দিয়ে রিপোর্ট লিখিয়েছে। নইলে অত অত বিসাদৃশ্য, অত অত কনট্রাডিকশন থাকতে পারে ন।