Image description

বর্তমান বিশ্বে নারীদের অবদান সর্বত্র। কিন্তু চলার পথে, গণপরিবহনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে; অনিরাপদ অভিজ্ঞতা যেন নিত্যসঙ্গী। কখনো ইভটিজিংয়ের শিকার, কখনো স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ, কখনো বা বলি হতে হয় ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের। এসব শারীরিক, মানসিক যৌন হয়রানির চিত্র পৌঁছেছে উদ্বেগজনক হারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙ্গে রাষ্ট্রের কঠোর পদক্ষেপই পারে এসব কর্মকাণ্ডের দরজায় পেরেক ঠুকতে।

প্রকাশ্যে কৌশলে নানা কায়দায় চলে শরীর ছুঁয়ে দেয়ার চেষ্টা। অনেকে দেখেও যেন ভান করেন না দেখার। লোকলজ্জার ভয়ে নীরবে-নিভৃতে নিত্যদিন সইতে হচ্ছে ভয়ঙ্কর এই যন্ত্রণা। কিইবা আর হয় প্রতিবাদে! প্রাপ্তির খাতা তো শূন্যই থাকে!

 
এক নারী বলেন, 

 

কিছু দিন আগেই আমার পাসের বাসার একজনকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে আসেনি। সারা দেশে এমন অসংখ্য ঘটনা আছে। এছাড়া রাস্তায় চলাচল করার সময় অনেকে নানাভাবে ছঁয়ে দিতে চায়। আর বখাটেদের দৌরাত্ম্য তো রয়েছেই!

 

নারীরা কোথায় নিরাপদ? ঘরে-বাইরে, পরিবারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে- নারীর নিরাপত্তা এখন প্রশ্নের মুখে। উৎসবের সময়ে কয়েক গুণ বেড়ে যায় সেই হয়রানি। এ থেকে মুক্তি মিলবে কীভাবে? এমন প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খেলেও মেলে না উত্তর।
 
 
শুধু পথ-ঘাটে নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নারীরা অহরহই শিকার হচ্ছেন নানা ধরনের হয়রানির। নারী যখন পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সফলতার গল্প লিখছে, তখন এগিয়ে যাওয়ার পথে যেন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নিপীড়ন-নির্যাতনের উদাহরণ। সম্প্রতি নারী-শিশু ধর্ষণের বেশ কয়েকটি ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে জনমনে।
 
বিচারহীনতার সংস্কৃতিই কি বাড়িয়েছে নিপীড়ক-ধর্ষকদের দৌরাত্ম্য? এ বিষয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সময় সংবাদকে বলেন, 

 

বিচার করতে দীর্ঘ সময় লাগে। তাই সেখানে নারীর বিচার পাওয়ার সম্ভাবনাই থাকে না। কারণ মামলা এতদূর চালিয়ে নিতে নিম্ন আয়ের মানুষরা পারে না। এ অবস্থায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে এ বিষয়ে আরও শক্তিশালী ভূমিকা আশা করছি।  

 

এই বিশেষজ্ঞের মতে, বাধাহীন অগ্রযাত্রায় সচেতনতা তো বটেই, কুসংস্কারের বৃত্ত ভেঙে নারীর পাশে দাঁড়াতে হবে সব শ্রেণিপেশার মানুষকেই।
 
 
ঘর-ঘরের বাইরেও পারিবারিকভাবে আপনজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হন অগণিত নারী। ২০২৪ সালে দেশে ৫১৬ জনেরও বেশি কন্যাশিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি ও মার্চ, প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। একটি কন্যাশিশু যখন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, তখন তা মানুষের বিবেককে কতটা নাড়া জানা নেই। তবে প্রশ্ন আছে, বিচারের বাণী কী নিভৃতেই কাঁদবে?