
সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের জনপ্রিয় রাজনৈতিক টক শো "রাজনীতি"তে অংশ নেন বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক রেজাউল করিম রনি। উপস্থাপক তাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক বক্তব্য ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন করেন।
উপস্থাপক বলেন, "নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরকে যেভাবে জানে ও বোঝে, তা অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে, ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদী তিস্তার প্রকল্পে চীনা ঠিকাদারদের স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। সেই বৈঠকের এক সপ্তাহ আগেই ড. ইউনুস চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আপনি কি মনে করেন—এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে?"
রেজাউল করিম রনি জবাবে বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ইতিহাস মূলত প্রতারণার। ভারত বাংলাদেশের সফলতা ও আত্মমর্যাদাকে হুমকি মনে করে। যদি বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়, তবে ভারতের ভেতরে যে জাতিগোষ্ঠীগুলো স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়ছে, তাদের কাছে বাংলাদেশ এক অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। এটা ভারত চায় না।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত সবসময় মুখে বন্ধুত্বের কথা বললেও বাস্তবে কখনোই বন্ধুসুলভ আচরণ করেনি। তাদের চাণক্যনীতি অনুযায়ী, মুখে এক আর অন্তরে আরেক। ভারত আজ ভুয়া তথ্য উৎপাদনে বিশ্বে এক নম্বরে—এটা মাইক্রোসফটের জরিপেও এসেছে।”
ড. ইউনুস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক প্রসঙ্গে রনি বলেন, “তিস্তা ইস্যু ভারতের জন্য শুধু প্রেস্টিজ নয়, বরং এটি তাদের নিরাপত্তা ইস্যু। ভারত চায় না চীন বা অন্য কোনো দেশ এ প্রকল্পে যুক্ত হোক। আমাদের উচিত হবে—তিস্তা নিয়ে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া, ভারতের মতো তৃতীয় পক্ষের চাপে না পড়ে।”
রনি বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বে ড. ইউনুস থাকায় এটি একটি কৌশলগত সুবিধা। কিন্তু সেই সুবিধা কতটা কাজে লাগছে? যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে, এ নিয়ে সরকারের তরফ থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও, জাতীয় পর্যায়ে একটি সুস্পষ্ট কৌশল দরকার। আমাদের গার্মেন্টস শিল্প, যা মূলত শ্রমশোষণের উপর নির্ভরশীল, সেখানে একটা জাতীয় শ্রমনীতি জরুরি।”
শেষে রনি মন্তব্য করেন,“শুধু সমস্যা নিরসন নয়, বরং এই সুযোগে শ্রমিকদের কল্যাণে ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”