
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীর পরিবারকে হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে, ওই কর্মকর্তা নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছেন। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা উপজেলা ট্রেডিং অফিসার (টিও) মো. আব্দুস সালাম। ভুক্তভোগী জবি শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠক মো. ফয়সাল মুরাদ।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফয়সাল। তার পোস্টের পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তোলে।
ফয়সালের দাবি, পারিবারিক বিরোধের সুযোগ নিয়ে আব্দুস সালাম তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলার পরিকল্পনা করেন। তার বোনের পক্ষে একটি সম্পত্তির অংশ দাবি করে ফয়সালের পরিবারকে থানায় ডেকে হুমকি দেন তিনি। গত ৫ মার্চ আটোয়ারী থানায় মারধরের অভিযোগে একটি মামলা করেন সালাম। তবে থানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফয়সালের ভাষ্য, সালাম তার ভাগিনা, ভাগিনার স্ত্রী ও ভাগিনার বাবাকে থানায় এনে শারীরিক নির্যাতনের হুমকি দেন। একটি ফোনালাপে সালামকে বলতে শোনা যায়, আজ রাত বারোটার পর থানায় ঢুকিয়ে ওকে মারবো। ছেলেকে মারবো, ছেলের বউকে মারবো, ছেলের ফ্যামিলিকেও মারবো। আটোয়ারীতে কোথাও একটা শব্দও হবে না। কেও কিছু বলতে পারবে না। ওসিও না।
ওসিকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, গোটা বিএনপিকে বলে রেখেছি, কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করেন, যদি চাকরি বাঁচাতে চান। ফয়সালের দাবি, পুরো কথোপকথনের অডিও রেকর্ড তিনি সংরক্ষণে রেখেছেন।
তিনি জানান, অডিওসহ থানায় গিয়ে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। অথচ একই সময়ে রাজনৈতিক দলের নেতারা ওসির কক্ষে প্রবেশ করে আলোচনায় অংশ নেন বলে দাবি করেন ফয়সাল। বিষয়টি নিয়ে থানার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার দাবি জানান তিনি।
ফয়সাল বলেন, আমি ছাত্রদলের পক্ষে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছি। আর সালাম সাহেব সরকারি চাকরিতে থেকেও বিএনপির নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটাচ্ছেন। ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আমি নেতৃত্ব দিয়েছি, অথচ থানার ওসিরা এখন রাজনৈতিক নেতাদের কথায় উঠবস করছেন। পুরো থানা চলছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা স্টাইলে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইলে আব্দুস সালাম বলেন, এসব ফালতু কথাবার্তা রাখেন। সাংবাদিকতা করতে আসছেন ফয়সাল মুরাদের হয়ে? কল রাখেন। এরপর কল কেটে দেন তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আটোয়ারী থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, তিনি (ফয়সাল) আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, আমি তখন কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাকে অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। পরে শুনি, তিনি চলে গেছেন। হুমকির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তার কোনো অভিযোগ থাকলে ডিউটি অফিসারের কাছে দিতে পারতেন।