
পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়েও নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি হতে হবে। ঢাকায় এবার ঈদে প্রায় ২০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া র্যাব, আনসার সদস্য, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
ঈদুল ফিতর উৎসব মুখর ও নিরাপদ করতে পদক্ষেপ বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন তৌহিদুজ্জামান তন্ময়।
জাগো নিউজ: ঢাকার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন?
সাজ্জাত আলী: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জোর তৎপরতায় রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। ব্যাপক পেট্রোল বাড়িয়েছি। বর্তমানে দিনে ২৫০ এবং রাতে ২৫০ পেট্রোল দায়িত্ব পালন করছে। প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্লকরেড হচ্ছে। পুলিশি তৎপরতায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আসন্ন ঈদেও আশা করছি পুলিশের তৎপরতায় অপরাধ অনেকাংশে কম থাকবে।
জাগো নিউজ: ঈদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন থাকবে?
সাজ্জাত আলী: কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকবে। রাস্তায় তল্লাশিচৌকি বসানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ও আবাসিক এলাকায় টহল জোরদার করা হবে। অপরাধী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা নেই।
ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে বাসাবাড়ি, দোকানপাটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আমার সম্পদের দেখভালের প্রথম দায়িত্ব আমার নিজের। এরপর পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
জাগো নিউজ: ঈদে কোনো হুমকি আছে কি না?
সাজ্জাত আলী: না কোনো ধরনের হুমকি নেই। পুলিশ সার্বক্ষণিক সজাগ।
জাগো নিউজ: ঘরমুখী মানুষের নিরাপত্তায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
জাগো নিউজ: ঈদের নিরাপত্তায় কত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে?
সাজ্জাত আলী: প্রায় ২০ হাজারের কাছাকাছি পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া র্যাব, আনসার সদস্য, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
জাগো নিউজ: ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগে নগরবাসীর উদ্দেশ্যে আপনার বার্তা কী?
সাজ্জাত আলী: ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে বাসাবাড়ি, দোকানপাটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আমার সম্পদের দেখভালের প্রথম দায়িত্ব আমার নিজের। এরপর পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি, আমাদের ব্যবস্থাপনাটা আমরা করবো।
জাগো নিউজ: ফাঁকা ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন থাকবে?
সাজ্জাত আলী: ঈদে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে রাতে বাড়ানো হবে পুলিশি টহল। ইতোমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও রেলস্টেশনে। পুরান ঢাকা ছাড়াও মহানগরের বিভিন্ন এলাকার সোনার মার্কেটে থাকবে পুলিশের কড়া নজরদারি। বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলা হলেও শাস্তি পেতে হবে। যেমন যদি কোনো ওসি মামলা না নেয় তাকেও ধরা হচ্ছে। গুলশানে ডাকাতির ঘটনা হয়েছিল কিন্তু মামলা না নেওয়ায় তৎক্ষণাৎ ওসিকে ক্লোজড করেছি।
জাগো নিউজ: ঈদ জামাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন থাকবে?
সাজ্জাত আলী: ঈদের প্রধান জামাতসহ রাজধানীর সব মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ। এছাড়া ড্রোন পেট্রোলিং, সাইবার পেট্রোলিং ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্মধারী পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে জাতীয় ঈদগাহের চারপাশে বহিঃবেষ্টনী ও আন্তঃবেষ্টনী গড়ে তোলা হবে। প্রবেশ গেটে থাকবে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে।
জাগো নিউজ: কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
সাজ্জাত আলী: অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলা হলেও শাস্তি পেতে হবে। যেমন যদি কোনো ওসি মামলা না নেয় তাকেও ধরা হচ্ছে। গুলশানে ডাকাতির ঘটনা হয়েছিল কিন্তু মামলা না নেওয়ায় তৎক্ষণাৎ ওসিকে ক্লোজড করেছি।
জাগো নিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সাজ্জাত আলী: জাগো নিউজ পরিবার ও ঢাকাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।