Image description

জুলাই সনদ বাংদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার যমুনায় মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেছেন। 

ড. ইউনূস আরও বলেন, কমিশনগুলোর প্রস্তাবিত সংস্কারের ব্যাপারে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে তারা জুলাই সনদে সই করবে। 

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্স। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কারে রাজি হলে সরকার ডিসেম্বরে নির্বাচন করবে। তবে দলগুলো যদি সরকারের কাছ থেকে সংস্কারের আরও বড় প্যাকেজ চায়, তবে কয়েক মাস পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে এটি অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন বড় রকমের উৎসব হবে, যেমনটা আমরা অতীতে দেখেছি।

মার্কিন সিনেটর পিটার্স অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, মূল কমিশনগুলোর প্রতিবেদন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।

সরকারের সংস্কার এজেন্ডার প্রশংসা করে পিটার্স বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রত্যাশা করছে। তিনি বলেন, ডেট্রয়েট শহরসহ মিশিগানে তার নির্বাচনি এলাকায় অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বসবাস করেন। তাদের কেউ কেউ সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়েও ব্যাপক ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে মার্কিন সিনেটর বলেন, এই ভুল তথ্যের কিছু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

ড. ইউনূস ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ-নির্বিশেষে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্টে পটপরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর আক্রমণগুলো রাজনৈতিকভাবে ছিল, ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল না, তবে তার সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।

এ সময় অধ্যাপক ইউনূস মার্কিন সিনেটরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর পরিদর্শনের আহ্বান এবং অন্যান্য মার্কিন রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও কর্মীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আপনার সাহায্য চাই। দয়া করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে বলুন। এভাবে আমরা এসব ভুল তথ্য প্রচার মোকাবিলা করতে পারি।

বৈঠকে দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে ক্ষুদ্রঋণ নিয়েও আলোচনা করেন।