
আগামী জাতীয় নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্বাচনী মাঠে কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা না দিয়ে নিয়মনীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে আহ্বান জানানো হয়। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা। বৈঠকে পুলিশ সদস্যরাও তাঁদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবিদাওয়া উপস্থাপন করেন।
বৈঠক শেষে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দুজন ডিআইজি ও একজন এসপি। সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর বক্তব্যে তিনি পুলিশের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। সেখানে বাহিনীর বদলি, পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়মমাফিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তা ছাড়া তিনি পুলিশ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং আশা প্রকাশ করেন, সংস্কারের মাধ্যমে বাহিনীর কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খল হবে।
ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে টহল গাড়ি অন্যদের কাছ থেকে ধার করে চালাতে হচ্ছে, যা পরে অনৈতিক তদবিরের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া মামলা ও জিডির তদন্তের জন্য বরাদ্দ খরচ কমে গেছে এবং অজ্ঞাতনামা মরদেহের দাফন-কাফনের জন্য কোনো তহবিল পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পুলিশের এসব দাবিদাওয়া সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকার পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে পুলিশের উচিত ভালো কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করা। আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ সদস্যদের কোনো ছাত্রসংগঠন বা বিশেষ দলের প্রতি অনুগত না থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মনীতির প্রতি নিষ্ঠা রেখে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে তাঁদের প্রতি।
একই সভায় আইজিপি বাহারুল আলম পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হলে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন দরকার। ওই কমিশনের অধীনে পুলিশ পরিচালিত হবে। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে এই বিষয় আসেনি বলেও তিনি জানান।