Image description
 

নিজের জীবন দিয়ে হলেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর শাহবাগিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার পর মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান। 

সাদিক কায়েম বলেন, ‘সমস্ত ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহর শপথ! জীবন দিয়ে হলেও দেশপ্রেমিক প্রতিবাদী নেতা, নাগরিক, উলামা, হুফফাজ ও ক্বারিদের রক্তপানকারী শাহবাগি এ অমানুষদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব। ইনকিলাব জিন্দাবাদ’।

এর আগে আরেকটি স্ট্যাটাসে এই শিবির নেতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আইকন লাকি আক্তারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। 

 

সাদিক কায়েম বলেন, বাংলাদেশপন্থি ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠনের মধ্যে তৈরি হওয়া বিভাজনের সুযোগ নিচ্ছে দেশবিরোধী শক্তি। তারাই শাহবাগের বিচারহীনতা ও ফ্যাসিবাদের আইকন লাকি আক্তারকে পুনর্বাসন করছে।

তিনি বলেন, শাহবাগের মাধ্যমেই হাসিনার ফ্যাসিজমের উত্থান ও পূর্ণতা। লাকিরা ছিল আওয়ামী লীগের চেতনা ব্যবসার ইনভেস্টমেন্ট ও রক্ষাকবচ। শাহবাগের মবোক্রেসিই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার দেশপ্রেমিক নেতাদের শহিদ করেছে। শহিদ করেছে প্রতিবাদী নাগরিক, উলামা, হুফফাজ ও কারিদের।  

‘সেই জায়গায় শাহবাগের পুনর্বাসনের কোনো প্রশ্নই উঠে না। যেকোনো মূল্যে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ইনকিলাব জিন্দা রাখতে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। 

শাহবাগিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে এই শিবির নেতা বলেন, জুলাইয়ের যে প্রজন্ম ফ্যাসিবাদ, মুজিববাদ, শাহবাগিতার পতন ঘটিয়েছে, সেই প্রজন্ম যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেতে কুণ্ঠাবোধ করবে না।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার বর্তমান সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খানকে ট্যাগ করে এই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে সাদিক বলেন, দুর্বলরা শাহবাগ তৈরি করতে পারে না কিন্তু ক্ষমতাবানেরা শাহবাগ তৈরির সক্ষমতা রাখে। দুর্বলদের তুলোধুনো করে আদি শাহবাগের একটিভিস্টদের ব্যাপারে নিরব থাকা সব শক্তির বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টায় ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০/৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়।

এসময় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ আরম্ভ করে।

এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন।

এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।