Image description

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বেওয়ারিশ লাশ যেন না থাকে, এটা আমরা কামনা করি। আমরা এমন একটা সমাজ বানাই যেখানে, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাজ আর নাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য। কারো লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে।

সোমবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের নতুন ভবন আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় অন‍্যান‍্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আলী ইমাম মজুমদার, আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের সভাপতি মুফলেহ আর ওসমানী এবং সহ-সভাপতি গোলাম রহমান। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা যার যার জায়গায় বেওয়ারিশ হওয়ার থেকে রক্ষা করতে পারি, যাতে তার আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব কাছে থাকে। তাকে যেন সম্মানজনক ভাবে দাফন করা যায়। এতে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ডের কোন ব্যাঘাত হবে না, বরং আমরা তাদের সম্মান জানাবো এই জিনিসগুলো তুলে ধরার জন্য।
 
নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আজকে আমার সৌভাগ্য এখানে উপস্থিত থাকা। ছোটবেলা থেকেই নাম শুনে আসছি। অদ্ভুত এক নাম, এই নামের কোনো ব্যাখ্যা জানতাম না তার সঙ্গে একটা জিনিস জড়িত। শুধু জানি ‘বেওয়ারিশ লাশ’। এরা কারা কোনোদিন জানি নাই, আজকে চাক্ষুষ দেখলাম। এরা এমন এক জগৎ থেকে ভেসে আসে, একটা লাশ পড়ে থাকলে উঠায় নিয়ে যায়। স্বপ্নিল একটা জিনিস। যত দুর্গম হোক, যত কঠিন পরিস্থিতি হোক ওই নামটি আসে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। এটা আমার কাছে খুব অবাক লাগতো। যার পরিচয় জানা নেই কিন্তু প্রতিদিন খবর আসছে, এখন জানলাম সাড়া দেশ জুড়ে আছে। তাদের কোনো বক্তব্য কখনও কোনো পত্রিকায় দেখি নাই। করেন কিনা জানা নেই কিন্তু আমার নজরে আসে নাই যে এই কাজে কোন বাহবা নিচ্ছেন। কিচ্ছু করে নাই , একেবারে চুপচাপ।
 
তিনি বলেন, করোনার সময় এই নাম বারেবারে এসেছে। কাজেই দেখছি যে চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে মুসলমান সমাজের সঙ্গে যাদের স্মৃতি আছে তাদের সবাই এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এটা একটা ঐতিহ্য বহন করে যাচ্ছে। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম নামের ব্যাখ্যা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় বলে মনে হয় না, নামটা শুনলেই সঙ্গে সঙ্গে মনে আসে কাজের কথা। এই নামটা সেই কাজের অর্থ বাহক। নামটি একটি নতুন অর্থ ধারণ করেছে। বহু দিন থেকে এটি অনন্য একটি প্রতিষ্ঠান।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বহু প্রতিষ্ঠান আছে। কেউ ৬ মাস, কেউ ১০ বছর টিকে। এতো দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রতিষ্ঠান টিকে আছে শুধু নয়, শক্ত আছে, মজবুত আছে, কার্যক্রম পরিচালনা করছে নানাদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এতিমদের দিকে নজর দিচ্ছে – এটা অবাক কাণ্ড। এরকম আরও প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টান্ত উপমহাদেশে আছে কি না আমার জানা নেই। আজকে আমরা গৌরববোধ করি যে এরকম একটা প্রতিষ্ঠান যারা চালিয়েছে, সময় দিয়েছে, মেধা দিয়েছে, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম না থাকলে আমরা জানতামও না যে এই লাশের কি হয়েছিল। এটা একটি প্রতীক মনে হোক, যেসব দুর্বলতা সমাজের মধ্যে আছে সেগুলো যেন আমরা দূর করতে পারি। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মতো মনোযোগ দিলে বহু সমস্যার সমাধান আমরা নিজেরাই করে ফেলতে পারি।