Image description
 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জন্য সরকারি তহবিল থেকে ২৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং যুক্তরাজ্যের অধুনালুপ্ত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ডিএফআইডি) অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালীকরণের (স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ–এসপিএল) ওই প্রকল্পে ধাপে ধাপে অর্থ ছাড় করা হয়েছিল।  

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী দরপত্র, অনুদান ও সহায়তা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হাইয়ারগভ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

হাইয়ারগভের সাইটে এমন তথ‍্য মেলে। বাংলাদেশে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল বাস্তবায়নে যৌথভাবে অর্থায়ন করেছিল ইউএসএআইডি এবং ডিএফআইডি। পাঁচ বছর মেয়াদী ওই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা পৃথক একটি চুক্তি করেছিল। পরে প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে দুই বছর আর সবশেষ ১০ মাস বাড়ানো হলেও ডিএফআইডি তাতে অর্থায়নের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে।

প্রসঙ্গত. ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিওএজি তাদের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছিল, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নানা প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’-এ ২৯ মিলিয়ন (২ কোটি ৯০ লাখ ডলার) অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। আর গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসপিএলে অর্থায়ন বাতিলের বিষয়টি ফের উল্লেখ করেন। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশে প্রকল্পের যে অর্থায়ন বাতিলের কথা বলছেন, সেটির শুরুই হয়েছিল ২০১৭ সালে। অর্থাৎ তিনি নিজেই ওই সময় প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। প্রকল্পটি যেহেতু মার্কিন করদাতাদের অর্থে পরিচালিত তাই এর অর্থায়ন বিষয়ক তথ্যগুলোও জনসমক্ষে প্রকাশিত। এই তথ্য কোন গোপন দলিল নয়। তাছাড়া বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন দেশীয় বেসরকারী সাহায্য সংস্থার জন্য উন্নয়ন সহায়তা বা অনুদান আসেনি। ফলে তা এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে ছাড়ের সুযোগ নেই।

হাইয়ারগভের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে ডিআইয়ের প্রকল্প শুরুর পর থেকে ২০২২ থেকে ২০২৫ সালে শেষ হওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ সালে শেষ হওয়া প্রকল্পের জন্য ১৬ দফায় প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল। এছাড়া ২০২৪ সালে শেষ হবে এমন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। 

হাইয়ারগভের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি সইয়ের পর এসপিএল প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয় মার্চে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দুতাবাসের মাধ্যমে ২৯ মিলিয়ন ৯০ ডলার সহায়তার জন্য চুক্তি হয়েছিল।মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সোমবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমার কাছে কোন স্পষ্ট তথ্য নেই যে, কাকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কে সেটা খরচ করেছে। পত্রিকায় দেখেছি যে যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রতিষ্ঠানকে খরচের জন্র এই অর্থ দেওয়া হয়েছে। আমরা তো এখনো জানি না। এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বলেছে যে এমন কোন এন্ট্রি তাদের নেই। আপাতত তাদের কথাই আমাদের মেনে নিতে হবে। তারপরও যদি কোন তথ্য বের হয়, তাহলে আমরা সেটা নিয়ে দেখবো।