
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, স্বল্প সময়ের হিসাবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি জোরদার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক নাগরিক রিলিফের (ত্রাণ) আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে রোহিঙ্গা হচ্ছেন।
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, সরকার থেকে ডিসেম্বর বা আগামী বছরের মধ্যে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। জুনে সম্ভব হবে না। করলে হয়তো আগামী বছরের এপ্রিলে করতে হবে। তবে আমরা মিনিমাম সময় ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, সরকার ছয় মাস মেয়াদী ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছে। যদি ন্যূনতম সংস্কার করা হয়, তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে, এর জন্য অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। ভোটার তালিকা ও অন্যান্য প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ মৃত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা অতীতে ভোট জালিয়াতির জন্য ব্যবহৃত হতো। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে জুন মাসের শেষে। এখন ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জুনের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেছে। যখন স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট করতে পারবো, তখন আমরা বলতে পারবো নির্বাচনের কথা। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজনৈতিক বিতর্কে আমরা জড়াতে চাই না।
ভোটার তালিকার পাশাপাশি অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ইসি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনে অনেক আবেদন এসেছে। আমরা এরইমধ্যে সরকারকে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। এখন সংস্কার কমিশন না হলেও তো আমাদের মিনিমাম হলেও সংস্কার করতে হতো। সেটা রাজনৈতিক দল নিবন্ধন হোক, আর সীমানা নির্ধারণ হোক, সেটা আমরা চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে এটি আমরা মনে করি না। একটি রাজনৈতিক ঐকমত্য হতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন সবাই চায়। এই একটি বিষয়ে পুরো জাতিই এক। সব দলের নিজস্ব দৃষ্টি আছে। এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। যাই হোক আমাদের প্রস্তুতি থেমে থাকবে না। আমাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা নেই। অন্যের এজেন্ডাও নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কাজ করছি।
রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেক নাগরিক রিলিফের (ত্রাণ) আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে রোহিঙ্গা হচ্ছেন। কাজেই এটি এক জটিল পরিস্থিতি।
নির্বাচনে গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখারা আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার আচরণবিধি কী হবে এমন বিষয় আসছে। এরইমধ্যে অনেকেই প্রচার শুরু করেছেন। তফসিলের আগে থেকেই কিন্তু হবে। চরিত্র হননও কিন্তু চলতে থাকবে। এটি যাতে না হয়, কীভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, গণমাধ্যম এতে ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য সাহায্য চাই।