Image description

এক বছরেও শেষ হবে না স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশব্যাপী স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন শেষ করতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক এ সংস্থাটি বলছে, স্থানীয় ও জাতীয় দুটি নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। স্থানীয় নির্বাচন করতে গেলে এক বছর সময় লাগে। এতে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় ধাপে ধাপে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে সব নির্বাচন একই সঙ্গে করা সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশন; উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন আলাদাভাবে ধাপে ধাপে করতে হবে। এ ছাড়া প্রায় ৮০০-৯০০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের উপযোগী রয়েছে। সব মিলে এক বছর সময় লাগতে পারে স্থানীয় নির্বাচন শেষ করতে। অন্যদিকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা; রমজান ও বর্ষার কারণে কয়েক মাস নির্বাচন বন্ধ রাখতে হবে।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গত বুধবার সংস্কারের প্রাথমিক সুপারিশমালা অন্তর্র্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেয়। সুপারিশে সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী এপ্রিলের মধ্যে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি একীভূত স্থানীয় সরকার আইন প্রণয়ন করতে হবে। এরপর জুনের মধ্যে সব সমতল ও পাহাড়ের ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদ এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন করা যেতে পারে। পাশাপাশি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ আইনকেও সংসদীয় কাঠামোতে সংস্থাপিত করে আইন সংশোধন করে জুনের মধ্যেই পাহাড়ের দুটি পরিষদের নির্বাচনও শেষ করা যেতে পারে। এদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, নির্বাচনে সময় কেমন লাগবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় দুটি নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। অতীতে আমরা দেখেছি স্থানীয় নির্বাচন করতে গেলে এক বছর সময় লাগে। এতে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে যাবে। ইসি জাতীয় নির্বাচন নিয়েই ভাবছে। এক্ষেত্রে সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবেই হবে। তিনি বলেন, যদি বড় আকারে স্থানীয় নির্বাচন হয়, আমরা আগেও বলেছিলাম পাঁচ স্তরের পুরোটাই স্থানীয় নির্বাচন করতে হয় তাহলে এক বছরের মতো সময় লেগে যায়। তাই টাইমলাইন দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা ধারণা করি যে সরকার আমাদের হাতের সময় বিবেচনায় নেবে। ২০২৪ সালে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন মে-জুনে হয়েছে চার ধাপে। ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট হয় পাঁচ ধাপে। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন হয় ছয়টি ধাপে। তবে ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে এক দিনেই ভোট হয়েছিল।

এদিকে ছোট পরিসরে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বেশ কিছু মেয়াদ শেষ হওয়া পৌরসভায় নির্বাচন করেছে বিগত নির্বাচন কমিশন। আর ৩ শতাধিক পৌরসভার মধ্যে ২০২০ সালের প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভায় ইভিএমে ২৮ ডিসেম্বর ভোট হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৬১ পৌরসভায় ভোট হয় ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি। জানুয়ারির শেষ দিকে তৃতীয় ও মধ্য ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থ ধাপের ভোট হয়। ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩৬ দিন সময় দিয়ে ভোটের তারিখ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বর। এক দিনে ভোট হয় ২৩৪টি পৌরসভায়।