
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরাসরি সব পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, যদি কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা বা তাদের প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়; তাহলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধান নিজেই যাতে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন; সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান কার্যালয়েও একটি মানবাধিকার সেল রাখার প্রস্তাব করা হয় সুপারিশে।
একটি দক্ষ, জনবান্ধব ও আধুনিক পুলিশ বাহিনী যে কোনো সমাজের অপরিহার্য অংশ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য ছাত্র-জনতা ও পুলিশ হতাহত হওয়ায় এ বাহিনীর কর্মদক্ষতা ও কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে; যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক, জনমুখী ও কার্যকর করে তোলার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিয়েছে।
কমিশন বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেপ্তার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা করা, তদন্ত ও ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছে।
সুপারিশমালায় গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেওয়ার অপচর্চা বন্ধ করা, বিচারপ্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন না করার সুপারিশ করা হয়েছে।
পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও জনবান্ধব পুলিশ-ব্যবস্থা গড়ে তুলতে র্যাবের অতীত কার্যক্রম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা পুনর্মূল্যায়ন করা যেতে পারে বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন।