ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারকে ঘিরে ফের ভাঙচুরের মুখে পড়েছে ধানমন্ডির ২৩ নম্বরের বাড়ি। বুধবার রাতে শেখ হাসিনার বক্তব্য আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। পলাতক অবস্থায় তার এই বক্তব্য প্রচারকে ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়াদের মাঝে। দিনেই ঘোষণা দেয়া হয় শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের সময় ধানমন্ডির ৩২ এর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। রাত আটটার দিকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি-৩২ এর দিকে যেতে থাকেন। রাত আটটার পরপরই ফটক ভেঙে শিক্ষার্থী ও জনতা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। তাদের কেউ কেউ হাতে থাকা লাঠি ও ভারি বস্তু দিয়ে স্থাপনার বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর করেন। রাত নয়টার দিকে ভবনের একটি অংশে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এই রিপোর্ট লেখার সময় শিক্ষার্থী-জনতা বাড়ির ভেতরে এবং বাইরে অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
বিক্ষোভ-ভাঙচুর চলার সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আশপাশে দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৩২ নম্বরের বাড়িতে প্রবেশ করেন। এসময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা হইচই শুরু করলে সেনা সদস্যরা সেখান থেকে বের হয়ে মিরপুর রোডে অবস্থান নেন। রাত এগারোটার পর একটি ক্রেন নিয়ে আসা হয়। পরে আরেকটি ভেকু আসে। এ দুটি দিয়ে ভবন ভাঙা হচ্ছে।
৫ই আগস্টের অভ্যুত্থানের দিনেই শেখ মুজিবুর রহমানের বাসস্থান ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে এই ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।
শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন এই ঘোষণার পর জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ বলেন, আমরা বুলডোজার দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচারের চিহ্ন মুছে দিতে চাই। অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ ঘোষণা দেন ঠিক যে সময়ে শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়া শুরু করবেন, তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি। সন্ধ্যায় ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে। এছাড়া আরো অনেকে ধানমন্ডি-৩২ এর বাড়ি ভেঙে দেয়ার প্রচারণা চালান