এক দশক আগেও পাড়ায় মুদিদোকান চালাতেন মুখলেসুর রহমান মুকুল। এখন তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। রাজশাহীতে তিনি পরিচিত ‘হুন্ডি মুকুল’ নামে। এত দিন তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রশ্রয়ে থেকেছেন। এখন আত্মগোপনে থাকলেও বিএনপি ও যুবদলের কিছু নেতা দাঁড়িয়েছেন মুকুলের পাশে।
আওয়ামী জমানায় প্রভাব খাটিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নে দুটি বালুমহাল ইজারা নেন মুকুল। সেই বালুমহালের ‘মধু খেতে’ মুকুলের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি ও যুবদলের জেলা এবং মহানগরের কয়েকজন নেতা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ইউনিয়ন বিএনপি।
মুকুলের বাড়ি রাজশাহী মহানগরের কাঁঠালবাড়িয়া গোবিন্দপুর মহল্লায়। ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আইজিপির কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ‘হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হওয়া প্রসঙ্গে বিশেষ প্রতিবেদনে’ হুন্ডি কারবারিদের তালিকা দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ওই তালিকার রাজশাহীর সিন্ডিকেট প্রধান ও মূল হোতা অংশে ২ নম্বরে রয়েছে মুকুলের নাম।
মুকুলের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এর আগে হুন্ডি মুকুলকে ছাতা হয়ে আগলে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ।
বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে মুকুলের মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুকুলের প্রতিষ্ঠান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বেশ কিছু কাজ করছিল। অসমাপ্ত কাজগুলো এখন মহানগর বিএনপির এক নেতা করতে চান।
বালু তোলা নিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীর আদালত এলাকায় মারধরের শিকার হন টমাস। মুকুলের ভাতিজা সাজিম ও জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকোর নেতৃত্বে দুই দফা হামলা হয় তাঁর ওপর।
জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতার কথা উল্লেখ করে টমাস বলেন, ‘তিনি ফোন করে বলছেন, মুকুল তাঁর আত্মীয়। বালুমহালের কোনো অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করা যাবে না। তাঁকে ব্যবসা করতে দিতে হবে।’
যুবদল নেতা ডিকো বলেন, ‘যারা বালুমহাল বন্ধ করতে চায়, তারা আসলে চাঁদাবাজি করছে।’