Image description
এসএম ফরহাদ
 

ডাকসুতে রেকর্ড জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। এই বিজয়ের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন নতুন জিএস এসএম ফরহাদ। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনো দলীয় প্যানেল দেখে ভোট দেন না। তারা দেখেন কে কতটা যোগ্য, কে আগে কী করেছে এবং ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করেছে কি না। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমজাদ হোসেন হৃদয়

আপনাদের প্যানেলের ভূমিধস বিজয় ও আপনি জিএস নির্বাচিত হয়েছেন—আপনার অনুভূতি কী?

এসএম ফরহাদ: আমি ব্যক্তিগতভাবে এটিকে শিবিরের বিজয়, সাদিক কায়েম বা ফরহাদ কিংবা মহিউদ্দিন খানের বিজয় হিসেবে দেখি না। আমি এটিকে দেখি শিক্ষার্থীদের বিজয় হিসেবে। তারা আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন—এটাই আসল বিষয়। এখন আমাদের হাতে শিক্ষার্থীদের একটি আমানত এসেছে। এই আমানত রক্ষা করাই আমাদের দায়িত্ব। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে জীবনের সবটুকু দেওয়াই আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমার কাছে এই বিজয় কোনো ব্যক্তিগত আনন্দের বিষয় নয়, বরং এটি একটি পরীক্ষা। আমি চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী আমার উপদেষ্টা হোক। আমি যদি কোনো ভুল করি, তারা যেন সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সমালোচনা করে সংশোধন করে দেন।

 

প্রতিদ্বন্দ্বী যারা পরাজিত হয়েছেন, তাদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

 
 

এসএম ফরহাদ: অবশ্যই আছে। আমরা কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছি না। যারা হেরেছেন বা দ্বিতীয়-তৃতীয় হয়েছেন, তাদের আমি পরাজিত মনে করি না। বরং তারা সবাই যোগ্য এবং শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। এখন তারা আমাদের উপদেষ্টা হয়ে কাজ করবেন। আমরা বিরূপ মন্তব্য বা কাদা ছোড়াছুড়িতে যাব না। বরং ভিন্নমত প্রকাশের জন্য সবার ডেমোক্রেটিক স্পেস থাকবে। যারা জয়ী হননি তারাও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা সবাই মিলে কাজ করব।

 

কালবেলা: এখন আপনাদের প্রধান লক্ষ্য কী?

এসএম ফরহাদ: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা। এজন্য পূর্ণাঙ্গ লিখিত কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি—কোন মাসে কী করা হবে, কীভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা হবে—এসব বিষয় নির্দিষ্ট করা হবে। আমি নেতা হিসেবে নয়, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে অন্য শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতে চাই। তাদের দুঃখ-সমস্যা, স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সাধ্যমতো সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাব।

কালবেলা: শিক্ষার্থীরা কেন আপনাদের প্যানেলকে বেছে নিয়েছে বলে মনে করেন?

এসএম ফরহাদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনো দলীয় প্যানেল দেখে ভোট দেন না। তারা দেখেন কে কতটা যোগ্য, কে আগে কী করেছে এবং ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করেছে কি না। আমাদের প্যানেলের প্রার্থীদের অতীত অবদান এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ধারাবাহিক কাজ করার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা বিবেচনায় নিয়েছেন। আর এই আস্থা ও বিশ্বাসই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত এবং প্রতিটি পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করাটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এবং এ দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা চাই।