Image description

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমকাল কথা বলেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহিদুর রহমান

সমকাল : পরিবেশ সুরক্ষায় আপনি সব সময় আপসহীন। ফলে একজন পরিবেশযোদ্ধা হিসেবে আপনার প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও অনেক বেশি। গত এক বছরে কতটা পরিবর্তন ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন? 

রিজওয়ানা হাসান : প্রত্যাশা পূরণ কিংবা পরিবর্তনের কথা যদি বলেন, আমি বলব কাজটা আমরা শুরু করতে পেরেছি। প্রত্যাশা পূরণ কিংবা পরিবর্তন আনা এক বছরের ব্যাপার না। এগুলো সময়সাপেক্ষ ও পরিবেশের উন্নয়নে অনেক পথ বাকি। তবে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পেরেছি। যেগুলো এতদিন আলোর মুখ দেখছিল না, সেই পদক্ষেপগুলো এখন ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। কাজের শুরুটা হয়েছে, এটাই বড় কথা। আমরা এখন পর্যন্ত আটটি পরিবেশ আইন, নীতিমালা ও নির্দেশিকা চূড়ান্ত করেছি। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন হয়নি। প্রতিটি বিষয় আমরা একটা একটা করে শুরু করেছি। পলিথিন বন্ধ, বায়ুদূষণ কমানো, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, নদীদূষণ বন্ধ করা, সেন্টমার্টিনকে বাঁচানো, বন উজাড় থামানোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে। পরিবেশের কাজ তাৎক্ষণিক দৃশ্যমান হয় না। রাস্তা বা ভবন নির্মাণ মানুষ সাদা চোখে দেখেন। পরিবেশের উন্নয়নে ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা জরুরি। যেমন শালবনে গাছ লাগানোর ফল দেখতে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগবে। অনেক বছর অনেক দরজা খোলা হয়নি, ধুলো জমেছে। আমরা সেসব দরজা খুলতে পেরেছি। 

সমকাল : পানিসম্পদ খাতে কি অগ্রগতি হয়েছে গত এক বছরে?

রিজওয়ানা হাসান : আমি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দেশের সব নদী দখল ও দূষণমুক্ত হয়ে যাবে, এ রকম একটা প্রত্যাশা অনেকের মধ্যে ছিল। আমার নিজেরও একটা স্বপ্ন হচ্ছে, প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে নদী যদি আমরা দখল ও দূষণমুক্ত করতে পারতাম– দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হতো। আমি কিন্তু কখনও বলিনি যে এক বছরে ৬৪ নদী দখল ও দূষণমুক্ত করব। এটা সময়সাপেক্ষ। ইতোমধ্যে দেশের সব জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে একটি করে নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিক ১৩টি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে দূষিত নদী লবণদহ, হাড়িধোয়া ও সুতাংয়ের প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং বর্ষার পরপরই কাজ শুরু হবে। বগুড়ার করতোয়া ও নাটোরের বড়াল নদের স্লুইসগেট অপসারণ করে পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ঢাকা শহরের ১৯টি খাল চিহ্নিত করে খননের কাজ শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় শুভাঢ্যা খাল খননসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের সহায়তায় প্রকল্প নকশা তৈরি হয়েছে, যেখানে স্থানীয় মতও যুক্ত করা হয়েছে। ভবদহ, আড়িয়াল বিল, বেলাইবিল ও চলনবিল রক্ষায় বিশেষ প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ১৯৯২ সালের ‘ওয়াটার কনভোকেশনে’ স্বাক্ষরকারী দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ।

সমকাল : কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে জাফলং, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আপনি বলেছিলেন, চার বছর পাথর তোলা বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন উপদেষ্টা হয়ে আর পারলাম না। এই হতাশা কেন? 

রিজওয়ানা হাসান : প্রশাসনিক নিয়মকানুন আমাদের জানা নেই। আমরা তো আগে কেউ সরকার চালাইনি। কাজ করতে এসে দেখেছি, প্রশাসনিক নিয়ম এত বেশি যে সুফল আনা বেশ চ্যালেঞ্জিং। মানে প্রক্রিয়া করতে করতে এক-দেড় বছর চলে যায়। ধরেন, আপনি বড় একটা নদী দূষণমুক্ত করবেন; ওটার জন্য একটা স্টাডি লাগবে। ওই স্টাডি কমপক্ষে এক থেকে দুই বছর ধরে করতে হয়। আমরা তো সময়ই পাচ্ছি এক থেকে দেড় বছর। আরেকটা বাধা ছিল, সেটা হচ্ছে প্রথম চার মাস কিন্তু আসলে আমরা ঠিকভাবে কার্যক্রম করতে পারিনি। কারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভঙ্গুর ছিল। প্রচুর বিক্ষোভ, বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়েছে। তারপরও এসব চ্যালেঞ্জ উত্তরণ করে কাজ করছি। আমাদের সময় লেগেছে, কারণ এই কাজগুলোর কথা কেউ কাউকে কোনো দিন বলেনি। যেমন সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, এটা কেমন করে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? জাহাজ বা টিকিট নিয়ন্ত্রণ করে, নাকি হোটেল বুকিং নিয়ন্ত্রণ করে? কাজগুলো তো কেউ কখনও করেনি। 
গাজীপুরে ৫ আগস্টের পর ৮৮ একর বনভূমি দখল হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা ৬৬ একর উদ্ধার করতে পেরেছি, বাকিটা পারিনি। কারণ বিপুল পরিমাণে শক্তি নিয়ে নামতে হয়। 

সমকাল : সামনে নির্বাচন, জাফলং নিয়ে এখন চিন্তাভাবনা কী?

রিজওয়ানা হাসান : আমরা জাফলংয়ে যে ১৭টি কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করলাম, সেখানে চ্যালেঞ্জ যেমন ছিল, সহায়তাও ছিল। খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে যখন আমরা বললাম যে ১৭টি হচ্ছে বেশ নান্দনিক এবং এগুলো হচ্ছে ‘ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল’। তারা কিন্তু আমাদের যুক্তি অনুধাবন করে ইজারাযোগ্য কোয়ারি তালিকা থেকে এগুলোকে বাদ দিল। কিন্তু সেখানে যখন আমরা ভিজিট করতে গেলাম তখন আক্রমণের মুখে পড়তেই হলো। তারপরে স্থানীয় প্রায় সব রাজনৈতিক দলকেই দেখলাম তারা পাথর উত্তোলনের পক্ষে। এখন তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব।

ভিয়েতনামে দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ আসে আমাদের জাফলংয়ের মতো একটা নদী দেখতে। আর সেখানে আমরা আমাদের জাফলংয়ের পর্যটনকে গুরুত্ব না দিয়ে কিছু মানুষের স্বার্থে শুধু পাথর উত্তোলনের কথা বলি। অথচ দেশের চাহিদার পাথরের মাত্র ৬ শতাংশ আসে জাফলং থেকে। বাকিটা আমরা আমদানি করি। জাফলংকে যদি সুন্দর করে রাখতে পারতাম, আন্তর্জাতিকভাবেও হয়তো আমরা এই পর্যটন কেন্দ্রের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে পারতাম। অনেক বেশি মানুষের নিরাপদ কর্মসংস্থান হতো। 
প্রশাসনিক অনেক জটিলতাও রয়েছে। সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি আগে ছিল, সেটাকে এড়িয়ে যাওয়ার আমাদের কোনো সুযোগ ছিল না। এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। ফলে কাজ কিছুটা জোরদার করতে পারছি। সামনে তো আবার নির্বাচন, সেটা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে। এ সরকারের পরিবেশের উন্নয়নের সুফল আসলে সাদা চোখে দেখা যাচ্ছে না। এই কাজগুলোর সুফল পাঁচ বছর পরে হয়তো দেখা যাবে।

সমকাল : আপনাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নানা সমালোচনাও আছে। বলা হচ্ছে, পরিবেশের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। আপনার ব্যাখ্যা কী?

রিজওয়ানা হাসান : ফেসবুক আমি সারাক্ষণ যে দেখি তা না। কিন্তু ফেসবুক পড়ে আমি অনেক কিছু জানতেও পারি। যে সরকার উৎখাত হলো, তার একটা সমর্থক গোষ্ঠী আছে। তারপর নানা রাজনৈতিক সমীকরণ আছে, তারা নানা সমালোচনা করে। তবে এগুলোর গঠনমূলক সমালোচনা কোনটা? যদি বলা হয়, আপনি তো পলিথিনের বিকল্প দেননি। এই সমালোচনা তো গ্রহণ করতে হবে। আমি সামাজিক মাধ্যমের সমালোচনায় মোটেও বিচলিত হই না। আমি জানি আমি কী করছি। আমি তো ৩১ বছর ধরে এই কাজই করে আসছি। ফেসবুকে কিছু যথাযথ সমালোচনা আসে, আমি সেগুলো গোনায় ধরি এবং সেসব নিয়ে কাজ করি।

সমকাল : পলিথিনের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তো এখনও সহজলভ্য হয়নি? 

রিজওয়ানা হাসান : যখন পলিথিন ব্যাগ ছিল না, তখনও মানুষ বাজার করেছে। ২৫ বছর আগে মানুষ বাজার করেনি? আপনাকে অভ্যাস করতে হবে বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার। আপনি সেটা চিন্তা না করে সরকার কেন বিকল্প দিল না, এটা চিন্তা করলে তো হবে না। বিকল্প সমাজেই আছে। আমরা বিকল্প আনার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল পাটের বেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেল। সেজন্য এখন সাশ্রয়ী মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে পাটশিল্প অনেকটাই এগোবে।

সমকাল : ইটভাটা বন্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক এখনও সহজলভ্য করা যাচ্ছে না কেন?

রিজওয়ানা হাসান : কংক্রিট ব্লকের প্রসার যে মাত্রায় দরকার ছিল, সে মাত্রায় হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্লক ব্যবহার করেনি। এখন আমরা সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিডিউলে ব্লক অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছি। এতে ব্লকের প্রসার ঘটবে।

সমকাল : সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। কিন্তু দ্বীপের বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে এ সরকার কী করেছে?

রিজওয়ানা হাসান : সেন্টমার্টিনের স্থানীয় মানুষের জন্য আমরা একটা বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা মতামত দিয়েছেন। সাড়ে পাঁচ হাজার বাসিন্দার একটা দ্বীপে যদি প্রতিদিন ১০ হাজার পর্যটক যায়, স্থানীয় মানুষ তো বিরক্ত হবেনই। সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা আমাদের কাছে তাদের সেই বিরক্তির কথা প্রকাশ করেছেন। আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন ও বিকল্প কর্মসংস্থানে পরিকল্পনা করেছি। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী একটা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এখন আমরা সেপ্টেম্বর থেকে কাজটা শুরু করব। 

সমকাল : আপনি যখন বেলার প্রধান নির্বাহী ছিলেন তখন বলতেন, ‘ঢাকায় একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে আছি।’ এখন আপনি নিজেই সরকারে। এই শহরে কি এখন শ্বাস নেওয়া যায়? 

রিজওয়ানা হাসান : বাসযোগ্যতার দিক থেকে ১৮০টি শহরের মধ্যে ১৭৯ নম্বরে ঢাকা। ১৭৯ থেকে ৫০-এ উঠে আসতে সময় লাগে। ৫০-এ চলে এলে তারপরে উত্তরণ। তখন সময় লাগবে না, কারণ তখন আইনকানুনসহ সব প্রতিষ্ঠান একটা নিয়মে চলে আসবে। সেগুলো তো এক-দেড় বছরে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু সে জন্য আমরা ভিত্তিগুলো করে দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

সমকাল : ঢাকার খেলার মাঠ ও পার্ক রক্ষায় আপনি অনেক আন্দোলন করেছেন। সেগুলো এখনও জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয়নি কেন? 

রিজওয়ানা হাসান : অনেক মাঠই দখলমুক্ত হয়েছে। কিছু মাঠ এখনও দখলমুক্ত হয়নি। যদিও সেটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় না। সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিয়েছে, মাঠগুলোকে দখলমুক্ত করছে।

সমকাল : কারওয়ান বাজারের পান্থকুঞ্জ পার্ক ও ফার্মগেটের আনোয়ারা উদ্যোন জনগণকে ফিরিয়ে দিতে আপনি এক সময় আন্দোলন করেছেন। কিন্তু এখনও এই পার্ক দখলমুক্ত করতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। কবে জনগণ এই দুটি পার্ক ফিরে পাবে? 

রিজওয়ানা হাসান : আনোয়ারা পার্ক নিয়ে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে যে স্থাপনা অপসারণ করে পার্ক ফেরত দেওয়া হবে। পান্থকুঞ্জ পার্কের বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। এ চুক্তি আমাদের সময়ে করা হয়নি। এটা একটা আইনত জটিলতা আমাদের জন্য। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটা আর্থিক বিশ্লেষণ করেছে। পার্কে র‌্যাম্প করার পরিকল্পনা থেকে তারা সরে এসেছে। কিন্তু যে খুঁটিগুলো আছে, তা অন্য কোথাও নেওয়া হলে প্রতিদিন সরকারকে কী পরিমাণ টাকা দিতে হবে– সেজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে যে এখানে চার একর জায়গার মধ্যে ৩.৭ একর পার্কই থাকবে। বাকি জায়গাটুকুতে যেন কেবল স্তম্ভগুলো করতে দেওয়া হয়। এর পরিবর্তে তারা বিকল্প পার্কের জায়গা দিচ্ছে। কিন্তু যারা আন্দোলন করছেন তারা তা মানছেন না। আন্দোলন যারা করছেন, তাদেরও অবশ্যই একটা যুক্তি আছে– পার্কের মধ্যে স্থাপনা হবে কেন। দেখা যাক একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে যাওয়া যায় কিনা।

সমকাল : আপনার আর কী কী পরিকল্পনা রয়েছে?

রিজওয়ানা হাসান : এর পরের দুটি মাস কেবল পরিবেশ আইন, পানি আইন, পরিবেশের যে গাইডলাইন আছে, বিধিমালা আছে– এগুলোকে আমি যুগোপযোগী করব। এগুলো আরও বেশি কার্যকর ও দায়বদ্ধ করার কাজে মনোযোগ দেব। এক বছর মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছি। প্রশাসনিক জটিলতা যেগুলো ছিল, সেগুলোর অর্ধেক সমাধান করতে পেরেছি। এখন আমি আইনকানুনে মন দেব।

সমকাল : দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখেছেন, পরবর্তী সরকার কীভাবে তা উত্তরণ করবে?

রিজওয়ানা হাসান : পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে নতুন ভোটারদের একটি বড় অংশ ভোট দেবেন। তাদের কাছে কিন্তু পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি এজেন্ডা। নতুন সরকার নিশ্চয়ই পরিবেশের ক্ষেত্রে দক্ষ এবং পরিবেশের জন্য মায়া আছে এমন কোনো নেতৃত্বকেই বেছে নেবে। তরুণ প্রজন্ম বা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই দেশকে নিরাপদ রাখতে যে ধরনের পরিবেশ নিরাপত্তা লাগে, তা বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অঙ্গীকার আছে এমন মানুষ নেতৃত্ব দেবেন। সরকারের নেতৃত্ব ও কার্যক্রমে সেই প্রতিফলন দেখা যাবে– এটাই প্রত্যাশা।

সমকাল : নির্বাচনের পর নতুন সরকার আসবে। তারপর আপনি কি আবার সেই আগের পরিবেশ আন্দোলনেই ফিরে যাবেন, নাকি রাজনীতি করবেন?

রিজওয়ানা হাসান : জীবনের ৩১টা বছরই আমি পরিবেশ আন্দোলন করেছি। বাকি যে কয়দিন বেঁচে থাকি পরিবেশ আন্দোলনই করব। আমি আমার আগের প্রতিষ্ঠানেই ফেরত যাব। আমি এখন যেখানে আছি সেখানেও পরিবেশবাদী হিসেবেই কাজ করছি। রাজনীতি আমি ততটুকুই করি, যতটুকু মানুষের ও প্রকৃতির অধিকারকেন্দ্রিক। কিন্তু দলীয় রাজনীতি করব না।

সমকাল : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

রিজওয়ানা হাসান : সমকালকেও ধন্যবাদ।