Image description

মৌলিক সংস্কার করতে গেলে সরকারের কিছু ক্ষমতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু সে ধরনের ক্ষমতা এ সরকারের নেই। যেমন সংবিধান সংস্কার একটি অনির্বাচিত সরকার করতে পারে না।

বর্ষীয়ান রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, তাত্ত্বিক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহনকারী বদরুদ্দীন উমর রাজনীতি ও গবেষণায় সম্পৃক্ত রয়েছেন ৫৩ বছর ধরে। দেশের রাজনীতি, ইতিহাস, দর্শন, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। চলমান রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিকা মাহজাবিন

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর অনেকগুলো মৌলিক সংস্কারের দাবি উঠেছিল। সরকার এজন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মৌলিক কোনো সংস্কার করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না কেন?

মৌলিক সংস্কার করতে গেলে সরকারের কিছু ক্ষমতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু সে ধরনের ক্ষমতা এ সরকারের নেই। যেমন সংবিধান সংস্কার একটি অনির্বাচিত সরকার করতে পারে না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে তা করতে হবে। তারা ছাড়া অন্য কেউ চাইলে সেটি হবে না; হচ্ছেও না। আর তা নির্বাচন ছাড়া সম্ভব না। এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুলিশসহ অনেক সংস্কার আছে—সেগুলোও এ সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এ সরকারের অন্যতম কাজ হলো নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে নির্বাচন দেয়া।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) অন্যান্য সংস্থার প্রেসক্রিপশনে কিছু সংস্কার হলো। এ সংস্কারগুলোকে কীভাবে দেখছেন?

আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার সময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশ দেয়া হয়। সেখানে মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা রকম বিষয় উল্লেখ থাকে। এগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে বেশ কিছু প্রভাব জনগণের ওপর পড়ে। আমাদের এখানে মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হলো আইএমএফের এসব দেনদরবার।

যার জন্য অতিষ্ঠ হয়ে কয়েকদিন আগে অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন, আমরা আইএমএফের কথায় আর চলব না। কিন্তু সেটি বললেও যে ঋণ দরকার তা আইএমএফের কাছ থেকে পেতে হবে। শেষ পর্যন্ত সংস্থাটির সঙ্গে বসেই তাদেরকে ফয়সালা করতে হয়েছে। আইএমএফের যে প্রেসক্রিপশন তার শেষ পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক ভূমিকা আছে বলে আমি জানি না। অভ্যুত্থানের পর পরই জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধারণ করে রাষ্ট্র গঠন প্রসঙ্গে নানা পক্ষ কথা বলেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ‘ন্যাশন বিল্ডিং’ কেমন হবে বলে আপনি মনে করেন?

জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে একটি নিকৃষ্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের উৎখাত হয়েছে। কিন্তু আমি আগেই বলেছি এটি কোনো সামাজিক বিপ্লব নয়—যেখানে একটি শ্রেণীর জায়গায় আরেকটি শ্রেণী ক্ষমতায় আসে। এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎপাদন ও মালিকানার সম্পর্কের কিছুই পরিবর্তন হয়নি। এমনকি ব্যবসায়ীদের কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ন রয়েছে। এ সরকার যেভাবেই প্রতিষ্ঠিত হোক, তারা শাসক শ্রেণীর বৃত্তের মধ্যে কাজ করছে। ব্যবসায়ী শ্রেণীর স্বার্থে এ সরকারকে এখন অনেক কিছু করতে হচ্ছে। একমাত্র ব্যাংকিং সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ এবং মূল্যবৃদ্ধি আয়ত্তের মধ্যে রাখা ছাড়া এ সরকারের তেমন উল্লেখযোগ্য কাজ নেই। কাজেই একটি রাষ্ট্রকে নতুনভাবে গঠন করার কোনো ভিত্তিও এখানে নেই।

বাংলাদেশের এখন যে অবস্থা তাতে কোনো নির্বাচিত সরকার এলেও এ শাসক শ্রেণীর বৃত্তের মধ্যে থাকতে হবে। কাজেই একটি নির্বাচিত সরকার এলে তারা যে খুব গণতান্ত্রিক বা বিপ্লবী সরকার হয়ে যাবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) যেভাবে ফ্যাসিজম করতে পেরেছে তা করতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ইতিবাচক একটি ফল হলো জনগণের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে। তারা আর নির্যাতন সহ্য করবে না। বিএনপির লোকেরা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝেছে। যার জন্য তারা বারংবার বলছে—‘আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) মতো কাজ করলে আমরা উৎখাত হয়ে যাব।’

বায়ান্ন, ঊনসত্তর এবং নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের চরিত্রের সঙ্গে চব্বিশের ছাত্র আন্দোলনের কোনো পার্থক্য দেখতে পেয়েছেন?

এ অঞ্চলে অনেক ছাত্ররাজনীতি হয়েছে। এসব আন্দোলনের পর যেসব ছাত্রনেতা বেরিয়ে এসেছে তাদের চরিত্র ছিল বামপন্থী। কখনই দক্ষিণপন্থী ছিল না। এবারই প্রথমবারের মতো দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে প্রকাণ্ড আন্দোলনের ছাত্রনেতাদের চরিত্র দক্ষিণপন্থী। এটি খুব বিস্ময়কর হলেও বাস্তব।

এছাড়া ৫ আগস্টের পর যেসব পরিবর্তন হয়েছে, তার মধ্যে বামপন্থী প্রভাব বলতে কিছু নেই। সাধারণভাবে বলা চলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন দক্ষিণপন্থী রাজনীতির বিপুল প্রাধান্য। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সবগুলোই দক্ষিণপন্থী। বামপন্থী দলগুলোর উপস্থিতি সামান্য। এটিই বর্তমান রাজনীতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক।

অভ্যুত্থানের পর ছাত্রদের সৃষ্ট রাজনৈতিক দল এনসিপি গঠনের প্রায় তিন মাস হতে চলল। দলটির কার্যক্রম নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।

ছাত্রদের দলের মধ্যে তো বড় রকমের আদর্শের কথা থাকা দরকার। কিন্তু এ ধরনের কোনো কিছু দলটির মধ্যে নেই। তাদের অবস্থা হলো ভাসমান। ভাসমান হলে যেমন মূল থাকে না, তাদের অবস্থাও তাই।

এদের শ্রেণী অবস্থা হলো এমন যাতে করে বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক বা অন্য কোনো উৎপাদক শ্রেণীর সঙ্গে তারা সম্পর্কিত না। বরঞ্চ আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যাবে, তারা সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়ী শ্রেণীর সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্যবসায়ীরাই তাদের চালিয়ে যাচ্ছে। এ অভ্যুত্থানের আগে তো এসবের কানাকড়িও ছিল না। অভ্যুত্থানের পর এতকিছু কোত্থেকে এল। এখন যেটি শোনা যায় শুধু সাংগঠনিকভাবেই তারা আয় করেছে এমন নয়। নিজেরাও অনেক টাকা আয় করে ফেলেছে। কাজেই ছাত্ররা কোনো কর্মসূচির ভিত্তিতে দাঁড়াবে বা দেশের মৌলিক কোনো শ্রেণীর স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে এমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এটি খুবই হতাশাব্যঞ্জক।

দ্রুত ক্ষমতায় যেতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোকজন দাঁড় করিয়ে যাতে নির্বাচনে সুবিধা নেয়া যায় সেই চেষ্টাই তারা করছে। তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা সে রকমই। তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি কিংবা ম্যানিফেস্টো নেই। মৌলিক সমস্যা নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী সৃষ্ট নতুন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যপন্থার অনুসারী দাবি করছে। তাদের মধ্যপন্থা নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।

অভ্যুত্থানের পর ছাত্ররা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। সে সময় তারা নিজেদের বলেছিল যে তারা দক্ষিণপন্থীও না, বামপন্থীও না, মধ্যপন্থী। কিন্তু মধ্যপন্থী বলে কিছু নেই। হয় বামপন্থী অথবা দক্ষিণপন্থী হতে হবে। আর মধ্যপন্থী যারা বলে তারা আসলে দক্ষিণপন্থী। নিজেদের দক্ষিণপন্থী বলতে চায় না বলেই নিজেদের মধ্যপন্থী বলে। ছাত্ররা তাদেরই অংশ। এখন পরিষ্কারভাবে তাদের দক্ষিণপন্থী অবস্থান দেখা যাচ্ছে।

প্রথমত, তাদের ধর্মীয় কথাবার্তা ও আচরণে এটি প্রকাশ পাচ্ছে। যার জন্য জামায়াতের সঙ্গে তাদের মাঝেমধ্যে দ্বন্দ্ব হলেও মোটামুটিভাবে তাদের সঙ্গে দলটির সম্পর্ক ভালো। এছাড়া দল গঠনের পর শ্রমজীবী ও কৃষকদের নিয়ে তাদের কোনো কথা নেই। তাদের সবচেয়ে বড় দাবি হলো আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) বিরোধিতা। অন্যটি হলো তারা নির্বাচন করতে চায়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে সংকট দেখা দিয়েছে। এটি কেন হলো?

দেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করে তাদের মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই। বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মত এবং কার্যকলাপ থাকে। এখনো সে রকমই হচ্ছে। নির্বাচনের সময় জোট হয় সেটি আলাদা বিষয়।

এখানে ঐক্য কেন হতে হবে? বরং এখন দরকার একটি নির্বাচন দিয়ে দেয়া। নিয়ন্ত্রণের অভাবে দেশে অনেক রকম সমস্যা হচ্ছে। এটা বন্ধ করার একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। যত দিন যাচ্ছে ততই শাসন ব্যবস্থার ওপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ আলগা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না দিলে সামনের দিনে নৈরাজ্য বেড়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। কিন্তু এ সরকারের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তারা যতদূর সম্ভব টেনে শাসনকাল বাড়াতে চাচ্ছে, এটি ক্ষতিকর।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তকে কীভাবে দেখেন?

আমি সাধারণভাবে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে। কোনো একটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে আগেও কথা বলেছি, এখনো আমি এটার বিরুদ্ধে। কিন্তু (নিষিদ্ধ ঘোষিত) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য জনগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যে আওয়াজ তুলেছে, সেটিকে সমর্থন করি। কেননা আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়; শেখ মুজিবের সময় যে আওয়ামী লীগ ছিল তার মতো নয়। শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ যতই ফ্যাসিস্ট হোক তা বাইরের কোনো শক্তির দ্বারা পরিচালিত হতো না। এখন যে আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) আছে এ দল ষোলো আনা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে। শেখ হাসিনা অন্য কোনো জায়গা না পেয়ে ভারতে বসে আছে।

(নিষিদ্ধ ঘোষিত) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে তারা ভারতের অর্থ-সম্পদ এবং অন্যান্য সাহায্য নিয়ে এখানে শক্তি হিসেবে দাঁড়াবে। তারা কোনো দিন নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কিন্তু এখানে নানারকম অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মাধ্যমে দেশ ও জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ অবস্থায় তাদেরকে কাজ করতে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না।

ভারত যে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করেছে তার একটি দৃষ্টান্ত হলো যারা এখানে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার সময় নিজেদের নিরাপদ মনে করছে না, দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে তারা সবাই ভারতে হাজির হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে কলকাতার নিউ টাউনে হাজারে হাজারে বাঙালি গিয়ে হাজির হয়েছে। এ এলাকাটি ক্রিমিন্যাল ও দুর্নীতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) কলোনিতে পরিণত হয়েছে।

ভারতও তাদের দিয়ে বাংলাদেশে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করছে। এ অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মেশিনারিজ হচ্ছে আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত)। এ দল বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে কোনো কাজ করছে না। এ আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) খুঁটি ভারতে বাঁধা আছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে এ দল চলছে, সেখানে নরেন্দ্র মোদির হুকুমমতো কাজ করছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এবং অন্য যেকোনো সরকারকে ক্ষতি করাই এদের কাজ। সুতরাং সাধারণ রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আর আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) ব্যান করা এক বিষয় না। তারা বাইরের শক্তির গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছে।

দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধের ব্যাপারে অনেকে জামায়াতের প্রসঙ্গ টেনে বলছেন, এ ধরনের নির্দেশনা জামায়াতের বিপক্ষে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হয়নি। আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) ক্ষেত্রে এমন কিছু ঘটতে পারে কি?

কার্যক্রমে অঘোষিত ও ঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার শেষ এক দশকে জামায়াত ভেতরে ভেতরে কাজ করেছে। যার জন্য ৫ আগস্টের পর দলটিকে আবারো মাঠে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। কিন্তু নানারকম দুষ্কৃতকার্য করায় আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) পড়ে গেছে। দেশের জনগণ এবং সরকারের ভয়ে তারা ভারতে পালিয়ে গেছে। জনগণকে দেয়ার মতো তাদের কিছু নেই। তাই মানুষ যে আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) জন্য উঠে দাঁড়াবে এমন সম্ভাবনা একেবারেই নেই। এছাড়া তারা জড়ো হতে পারলে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করবে।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে বামপন্থী রাজনীতির উত্থান ঘটতে পারে কি?

এখানে শোষণ আছে। দুটি শ্রেণীর মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে, যা বামপন্থী রাজনৈতিক দলের রাজনীতির শর্ত তৈরি করে। রাজনীতির চড়াই-উতরাই থাকে। ষাটের দশকে বামপন্থীদের চড়াই অবস্থা ছিল। স্বাধীনতার পর উতরাই দেখা দেয়। যার জন্য বামপন্থী রাজনীতি এখন নিচের দিকে পড়ে আছে। কিন্তু এক অবস্থা তো চিরদিন থাকে না। বামপন্থীদের এখন তেমন কোনো তৎপরতা নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে এ অবস্থা থাকবে না। কাজেই বামপন্থী দলগুলো সম্ভাবনাময়। তবে এ সম্ভাবনা কখন বাস্তব রূপ লাভ করবে তা এ মুহূর্তে বলা চলে না।