ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। মেলায় আসা সনাতনী ধর্মাবলম্বীদে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন স্থানীয় মুসলিমরা।
এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার পর তীব্র যানজটে আটকে পড়েন বহু মানুষ। বিশৃঙ্খলার কারণে অনেকেই নির্দিষ্ট যানবাহনে চড়তে পারেননি। তাদের জন্য মসজিদ, মাদ্রাসা এমনকি নিজেদের বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছেন স্থানীয় মুসলিমরা। করেছেন খাবার, পানীয়, কম্বলের ব্যবস্থা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ২৯ জানুয়ারি কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এর পরেই কুম্ভে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে বাস এমনকি গাড়িও। না খেয়ে, ঠান্ডায় গাড়িতে বসে অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু মানুষ।
মধ্যপ্রদেশ থেকে মেলায় আসা রামনাথ তিওয়ারি বলেন, আমরা অসহায় পড়েছিলাম। ক্লান্ত, বিধ্বস্ত হয়ে যাই। সে সময়ই এগিয়ে আসেন নাখাস কোহনা, রোশন বাগ, হিম্মতগঞ্জ, খুলদাবাদ, রানিমণ্ডির মুসলিমরা। রাতে খুলে দেন খুলদাবাদ সব্জি মণ্ডি মসজিদ, বড় তাজিয়া ইমামবাড়া, চৌক মসজিদের দরজা। সেখানে আশ্রয় নেন বহু মানুষ। তাদের চা, গরম খাবার পরিবেশন করেন তারা।
বাহাদুরগঞ্জের মোহম্মদ ইরশাদ বলেন, এ সব বিপদের সময়ে কেউ হিন্দু বা কেউ মুসলিম নন, সবাই মানুষ। রাস্তায় রাস্তায় খোলা হয় সেবাকেন্দ্র। সেখানে বহু পুণ্যার্থীকে গরম চা, খাবার, পানীয় দেওয়া হয়। অনেক মুসলিম আবার নিজের বাড়িতেও আশ্রয় দিয়েছেন পুণ্যার্থীদের।
রাজা আব্বাস জাইদি নামের এক প্রাথমিক শিক্ষক জানান, খবর পেয়ে নারীরাও আগত হিন্দুদের জন্য রান্না শুরু করে দেন। খিচুড়ি, মটর পোলাও রান্না করা হয়। শিশুরা আটকে পড়া পুণ্যার্থীদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসায়।
চলতি বছর কুম্ভে মুসলিমদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদ জাহিদ নামে ইলাহাবাদের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল, কুম্ভে আসা যাবে না। তবে বিপদ যখন এল, তখন আর বসে থাকতে পারিনি। সাহায্যের জন্য ছুটে গিয়েছি।