Image description

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআতির সঙ্গে ফোনালাপে চীন-মিসর সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও গভীর করার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ ফোনালাপে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, চীন-আরব শীর্ষ সম্মেলন এবং গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

ওয়াং ই বলেন, চীন ও মিসর সর্বাঙ্গীণ কৌশলগত অংশীদার। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মধ্যে দৃঢ় বন্ধুত্ব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিয়েছে। আগামী বছর চীন-মিসর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে পারস্পরিক সমর্থন আরও সুদৃঢ় করা, বাস্তব সহযোগিতা গভীর করা এবং বহুপাক্ষিক সমন্বয় জোরদারের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।

ওয়াং ই বলেন, চীন-মিসর সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব নতুন উচ্চতায় উন্নীত হলে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলো যৌথভাবে আধুনিকায়ন এগিয়ে নিতে পারবে এবং বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে নতুন চীন-মিসরীয় অবদান রাখা সম্ভব হবে। তিনি জানান, আগামী বছর চীন দ্বিতীয় চীন-আরব রাষ্ট্র শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে। আরব বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে মিসরের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় জোরদার করতে চীন প্রস্তুত এবং সম্মেলনে অংশ নিতে মিসরের নেতৃবৃন্দকে চীনে আমন্ত্রণ জানান।

বদর আবদেলআতি বলেন, মিসর-চীন সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্বের ভিত্তি অত্যন্ত সুদৃঢ়। মিসর চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে, ‘এক চীন’ নীতি কঠোরভাবে মেনে চলে এবং তাইওয়ানকে চীনের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।

তিনি জানান, আগামী বছর মিসর-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের পারস্পরিক সফর জোরদার, বাস্তব সহযোগিতা গভীর করা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চীনের সঙ্গে কাজ করতে মিসর আগ্রহী।

গাজা পরিস্থিতির সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরে বদর আবদেলআতি বলেন, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে চীনের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এবং ফিলিস্তিনের জন্য নতুন দফা সহায়তা ঘোষণার জন্য মিসর চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। গাজায় শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় চীনের ভূমিকার প্রতিও তিনি সমর্থন জানান।

ওয়াং ই বলেন, গাজা সংঘাত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকায় ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এই মানবিক বিপর্যয় অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজার যুদ্ধোত্তর শাসনব্যবস্থার বিষয়টি ফিলিস্তিন সমস্যার সার্বিক সমাধানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে বিবেচনা করা জরুরি।

ওয়াং ইয়ের মতে, সার্বিক সমাধানে চারটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ‘ফিলিস্তিনিদের দ্বারা ফিলিস্তিনি শাসন’ নীতি বজায় রাখা। দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যৌক্তিক উদ্বেগকে গুরুত্ব দেওয়া। তৃতীয়ত, ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান’-এর সঠিক দিকনির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকা। চতুর্থত, জাতিসংঘ ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং গাজার যুদ্ধোত্তর শাসনে তাদের ভূমিকা পালনে সমর্থন দেওয়া।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট শি ফিলিস্তিনের জন্য চীনের নতুন দফা সহায়তা ঘোষণার উদ্দেশ্য গাজার মানবিক সংকট লাঘব এবং পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনকে সমর্থন করা। মিসরের ইতিবাচক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে ওয়াং ই বলেন, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় মিসরের গঠনমূলক ভূমিকা চীন অব্যাহতভাবে সমর্থন করবে এবং ফিলিস্তিন সমস্যার দ্রুত, পূর্ণাঙ্গ, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাধানে মিসরের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।