Image description

অস্ট্রেলীয় পুলিশ জানিয়েছে, সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় দুই বন্দুকধারী বাবা ও ছেলে জড়িত। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পুলিশ জানায়, ৫০ বছর বয়সি বাবা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার ২৪ বছর বয়সি ছেলে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার কারণ জানা যায়নি। ব্রিটিশ বাতা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি ও অন্যান্য স্থানীয় গণমাধ্যমে ঘাতক বাবা ও ছেলের নাম প্রকাশিত হয়েছে। তাদের নাম সাজিদ আক্রম ও নাভিদ আক্রম।

পুলিশ জানায়, বাবা একটি গান ক্লাবের সদস্য ছিলেন এবং দীর্ঘ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বৈধ লাইসেন্স ছিল তার।

বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশগুলোর একটি অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে গণ গুলিবর্ষণের ঘটনা খুবই বিরল। প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে এটি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক সহিংসতা। এর আগে ১৯৯৬ সালে দক্ষিণের দ্বীপ রাজ্য তাসমানিয়ার পোর্ট আর্থার পর্যটন এলাকায় এক বন্দুকধারীর হামলায় ৩৫ জন নিহত হন।

কর্মকর্তারা রবিবারের এই গুলির ঘটনাকে লক্ষ্যভিত্তিক ইহুদিবিদ্বেষী ও সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে।

পুলিশ জানায়, হামলার পর এখনও ৪০ জন হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, যাদের অবস্থা গুরুতর। নিহত ও আহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছরের মধ্যে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রচণ্ড গরমের এক সন্ধ্যায় জনপ্রিয় সৈকতে এই হামলা প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে শত শত মানুষ সমুদ্র সৈকত ও আশপাশের রাস্তায় ছুটোছুটি শুরু করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, লক্ষ্যবস্তু করা হনুক্কা অনুষ্ঠানটিতে এক হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানটি সৈকতের পাশে একটি ছোট পার্কে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।

পুলিশ জানায়, বাবা ২০১৫ সাল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী ছিলেন এবং তার কাছে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছয়টি অস্ত্র ছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী টনি বার্ক বলেন, বাবা ১৯৯৮ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং তার ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া নাগরিক।

পুলিশ অস্ত্রগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারীরা সম্ভবত একটি বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল ও একটি শটগান ব্যবহার করছিলেন।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দু’জনেরই পটভূমি খতিয়ে দেখছি। এই মুহূর্তে তাদের সম্পর্কে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই।’

অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি প্রবাসী জনগোষ্ঠী সংখ্যায় ছোট হলেও বৃহত্তর সমাজের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ২ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার দেশে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিজেদের ইহুদি হিসেবে পরিচয় দেন। তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বন্ডিসহ সিডনির পূর্বাঞ্চলীয় উপশহরে বসবাস করেন।

হামলার পর বার্লিন, লন্ডন ও নিউইয়র্কসহ বড় বড় শহরে হনুক্কা অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।