অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের হানুকা উৎসবে দুই বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় বীরত্ব দেখিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন এক পথচারী। ঘটনার দিন তিনি এক বন্দুকধারীকে পেছন থেকে জাপটে ধরে রাইফেল কেড়ে নিয়েছিলেন। সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হওয়ায় তিনি এখন হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার ‘হিরো’। সাহসী এই পথচারীর নাম আহমেদ আল আহমেদ।
ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পার্কিং এলাকায় একজন ব্যক্তি দৌড়ে গিয়ে রাইফেলধারী এক বন্দুকধারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি হামলাকারীকে কাবু করে তার কাছ থেকে অস্ত্রটি কেড়ে নেন এবং পরে সেই অস্ত্রটি মাটিতে রেখে দেন।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, নিরস্ত্র হামলাকারীটি হোঁচট খেয়ে পেছনে সরে যায় একটি সেতুর দিকে, যেখানে আরেকজন বন্দুকধারী অবস্থান করছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় একজন সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হয়েছে এবং আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃতীয় কোনো বন্দুকধারী জড়িত ছিল কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বহু ব্যবহারকারী ওই সাহসী ব্যক্তির প্রশংসা করে বলেন, তার দ্রুত ও সাহসী পদক্ষেপ অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম আহমেদ আল আহমেদ, বয়স ৪৩ বছর, তিনি সিডনির বাসিন্দা। তবে আল জাজিরা তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আহমেদের এক চাচাতো ভাই মুস্তাফা জানান, ঘটনার সময় আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন।
তিনি বলেন, “সে হাসপাতালে আছে, ভেতরে কী পরিস্থিতি আমরা এখনো জানি না। আমরা আশা করছি সে সুস্থ হয়ে উঠবে। সে নিঃসন্দেহে একজন নায়ক।”
মুস্তাফা জানান, রোববার রাতেই তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স বলেন, “আমি জীবনে এমন অবিশ্বাস্য দৃশ্য আর দেখিনি। ওই ব্যক্তি একজন প্রকৃত নায়ক। তার সাহসিকতার কারণেই আজ রাতে অনেক মানুষ বেঁচে আছে।”
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও সাহসী নাগরিকদের প্রশংসা করে বলেন, “কিছু অস্ট্রেলিয়ান বিপদের দিকে দৌড়ে গেছেন অন্যদের বাঁচাতে। তারা প্রকৃত নায়ক, এবং তাদের সাহসিকতা বহু প্রাণ রক্ষা করেছে।”
এদিকে, বন্দুকধারীদের এই হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। এছাড়া, এই হামলা ইচ্ছাকৃত ভাবে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। পাশাপাশি এ ঘটনায় হামলাকারীরা বাবা ও ছেলে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।