কানাডা সরকার গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা পাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের ভিসা জালিয়াতির আশঙ্কাকে উল্লেখ করা হয়েছে। সিবিসি নিউজ’র হাতে আসা অভ্যন্তরীণ নথিতে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা, কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি এবং মার্কিন অংশীদাররা মিলে ভিসা জালিয়াতি শনাক্ত ও বাতিলের জন্য একটি দল গঠন করেছে। ওই উপস্থাপনায় ভারত ও বাংলাদেশকে ‘দেশভিত্তিক চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
নথিতে বলা হয়েছে, গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা ব্যবহার করার কারণ মহামারি ও যুদ্ধ। তা নির্দিষ্ট দেশের ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই প্রস্তাবটি বিল সি-২-এর অংশ হিসেবে সংসদে তোলা হয়, যা বর্তমানে বিল সি-১২ হিসেবে আলাদা করা হয়েছে। সরকার চাইছে দ্রুত এই আইন পাস হোক। তবে ৩০০-রও বেশি সিভিল সোসাইটি সংগঠন এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছে।
অনেকে ধারণা করছেন, আবেদনপত্রের বাড়তি চাপ সামলাতেও এই ক্ষমতা কাজে লাগাতে চায় সরকার। নথি অনুযায়ী, ভারতীয় নাগরিকদের আশ্রয় আবেদন (অ্যাসাইলাম) ২০২৩ সালের মে মাসে মাসে ৫০০-র কম থাকলেও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা বেড়ে ২ হাজারে পৌঁছায়।
ভারত থেকে অস্থায়ী ভিসা যাচাই করতে বেশি সময় লাগছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই শেষে যেখানে গড় প্রসেসিং সময় ছিল ৩০ দিন, ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৫৪ দিনে দাঁড়ায়। অনুমোদনের সংখ্যাও কমে যায়—জানুয়ারিতে ৬৩ হাজার থেকে জুনে ৪৮ হাজারে নেমে আসে।
এছাড়া ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে ভারতে বিমানবোর্ডিং নিষেধাজ্ঞার (নো বোর্ড) ঘটনা বেড়েছে। জুলাই শেষে ১ হাজার ৮৭৩ জন আবেদনকারীকে অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদ ও আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ভারত ও বাংলাদেশকে কেন বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেয়নি কানাডার অভিবাসন বিভাগ।
অন্যদিকে, কানাডা এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। ২০২৩ সালে শিখ নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের পর দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়।
২০২৪ সালের জুনে জি–৭ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কানাডা সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের আগ্রহ প্রকাশ করেন। আগস্টে উভয় দেশ একে অপরের জন্য নতুন হাইকমিশনার নিয়োগ দেয়।