Image description

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থার নতুন পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট পরিষ্কার করে বলেছেন, আপাতত এসব পরীক্ষায় কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। এটি ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা, যেহেতু গত সপ্তাহে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছিলেন যে, তিনি ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’কে নির্দেশ দিয়েছেন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাগুলো সমান ভিত্তিতে পুনরায় শুরু করতে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। ওদিকে ক্রিস রাইট ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা এখন যে পরীক্ষাগুলোর কথা বলছি, তা হলো সিস্টেম টেস্ট। এগুলো কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণ নয়। এগুলো আমরা বলি নন-ক্রিটিক্যাল এক্সপ্লোশন। তিনি আরও জানান, এই পরিকল্পিত পরীক্ষাগুলোতে পারমাণবিক অস্ত্রের সব অন্যান্য অংশ পরীক্ষা করা হবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে সেগুলো সঠিক জ্যামিতিক বিন্যাসে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতের পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া ঠিকভাবে শুরু করতে সক্ষম। ক্রিস রাইট বলেন, এসব পরীক্ষা নতুন প্রজন্মের সিস্টেমে চালানো হবে, যাতে আগের অস্ত্রগুলোর তুলনায় উন্নত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা যায়।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা ঘিরে বিভ্রান্তি: বৃহস্পতিবার থেকে ট্রাম্পের বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিভ্রান্তি শুরু হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ৩৩ বছর পর আবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করবে- যা বিশ্লেষকদের মতে চীন ও রাশিয়ার প্রতি এক প্রকার সতর্কবার্তা। শুক্রবারও ট্রাম্প তার মন্তব্য পুনরায় নিশ্চিত করেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি সরাসরি বলেননি যে, এতে শীতল যুদ্ধকালীন যুগের মতো ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক বিস্ফোরণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে কিনা। ক্রিস রাইট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬০, ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে পারমাণবিক বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা চালিয়েছিল এবং সেইসব বিস্ফোরণের ওপর বিশদ বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং গণনাশক্তির কারণে আমরা এখন কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে একদম নিখুঁতভাবে নির্ধারণ করতে পারি, একটি পারমাণবিক বিস্ফোরণে কী ঘটে। এখন আমরা সেই শর্তগুলো সিমুলেট করি এবং যখন আমরা নতুন বোমার নকশা পরিবর্তন করি, তখন সেটি কী ফল দেবে তা হিসাব করি।

ট্রাম্প কী বলেছেন এই পরিকল্পনা নিয়ে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার এই পারমাণবিক পরীক্ষার সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া ও চীনের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এই পরিকল্পনার প্রধান কারণ। সিবিএস নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, মস্কো ও বেইজিংও তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে। তারা শুধু সেটা প্রকাশ্যে বলে না। আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আমি মনে করি নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিছু করা উচিত। আমি আসলে এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের কাছে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো অস্ত্র আছে। রাশিয়ারও প্রচুর আছে, চীনেরও অনেক হবে- ইতিমধ্যেই কিছু আছে।

ট্রাম্পের যুক্তি হলো, আমাদের অস্ত্র পরীক্ষা করতেই হবে। কারণ আপনি জানতে পারবেন কেবল তখনই যখন দেখবেন সেগুলো কাজ করছে কিনা। রাশিয়া ঘোষণা দিয়েছে যে তারা পরীক্ষা করবে। আপনি দেখেছেন, উত্তর কোরিয়া তো নিয়মিত পরীক্ষা করছে। অন্য দেশগুলোও করছে। শুধু আমরাই করছি না, আর আমি একমাত্র দেশ হিসেবে পেছনে থাকতে চাই না। তিনি আবারও বলেন, রাশিয়া পরীক্ষা করছে, চীনও করছে- তারা শুধু সেটা নিয়ে কথা বলে না।