Image description
 

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি পেন্টাগনকে অবিলম্বে পারমাণবিক পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের শেষ পারমাণবিক পরীক্ষা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর দেশটি পারমাণবিক পরীক্ষার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল।

 

ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আমার প্রথম মেয়াদকালে এসব অস্ত্র সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণ ও সংস্কার করা হয়। ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার কারণে আমি এটা করতে চাইনি, কিন্তু অন্য দেশগুলোর পরীক্ষার কারণে আমাকে বাধ্য হতে হয়েছে। তাই আমি ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার’-কে নির্দেশ দিয়েছি সমান ভিত্তিতে আমাদের অস্ত্র পরীক্ষার কাজ শুরু করতে।”

তবে তার এই মন্তব্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। রাশিয়া এবং চীন—যাদের ট্রাম্প দোষারোপ করছেন—দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। রাশিয়ার শেষ পরীক্ষা হয়েছিল ১৯৯০ সালে, চীনের শেষ পরীক্ষা ১৯৯৬ সালে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার নতুন অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পরীক্ষার প্রতিক্রিয়া হিসেবে হতে পারে। যদিও এই পরীক্ষা পারমাণবিক নয়, কেবল অস্ত্র পরিবহন প্রযুক্তি সংক্রান্ত।

 

ট্রাম্পের ঘোষণাটি এমন এক সময় এসেছে, যখন তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে এই বৈঠককে ‘G2 সম্মেলন’ উল্লেখ করেছেন, যা আন্তর্জাতিক কৌশল ও নিরাপত্তা নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ রাশিয়া ও চীনকেও নতুন অস্ত্র পরীক্ষা চালানোর অজুহাত দিতে পারে। এতে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক প্রতিযোগিতা নতুন মাত্রা পেতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটেও যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের সঙ্গে ২০০৫ সালে স্বাক্ষরিত 123 চুক্তি অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনকে যৌক্তিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতও পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে পারে। তবে এটি শুধু দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক প্রতিযোগিতার পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনাই নয়, আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কাঠামোও দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।