Image description

বিরল খনিজে চীনের আধিপত্য ঠেকাতে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। সোমবার বিরল খনিজ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করলো এ দুই দেশ। এর মাধ্যমে ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সরবরাহ চেইন তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, বিরল খনিজের বাজারে চীনের আধিপত্য ঠেকাতেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেছে মার্কিন প্রশাসন। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। বলেছেন, এর মাধ্যমে বিরল খনিজ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো একটি পাইপলাইনে আসবে। পাশাপাশি দেশের খনিজ ও প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাও বহুগুন বৃদ্ধি পাবে। 

আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই চুক্তি কার্যকর করা হবে। চুক্তি এগিয়ে নিতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে উভয় দেশ। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে তার প্রশাসন। আলবানিজ বলেছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে এই চুক্তি দুই দেশের অংশীদারিত্বকে পরবর্তী স্তরে পৌঁছে দেবে। তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার দেশ এই চুক্তিতে রাজি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার বিরল খনিজ প্রক্রিয়াকরণ সুবিধাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত করা। এছাড়া রয়েছে দুই দেশের মূল্য নির্ধারণ, অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং খাতটির কোম্পানি ও প্রকল্পের বিক্রয় সংক্রান্ত সরকারি পর্যালোচনার নিয়ম নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা।

এদিকে আলাদাভাবে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় একটি গ্যালিয়াম পরিশোধনাগার নির্মাণে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোকে এগিয়ে নিতে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক-এর মাধ্যমে প্রায় ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর মঙ্গলবার পার্থ-ভিত্তিক ফার্ম আরাফুরা রেয়ার আর্থস-এর শেয়ার প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আরেক প্রধান উৎপাদক ইলুকা রিসোর্সেস-এরও শেয়ার ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিরল খনিজের প্রায় ৭০ ভাগ এবং এই খনিজের প্রক্রিয়াকরণের ৯০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এসব খনিজ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়ি নির্মানে ব্যবহৃত হয়। চীনের আধিপত্যের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জন্য চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। যা তাদের জন্য বড় দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। মূলত এ কারণেই বেইজিংয়ের ওপর ক্রমাগতভাবে শুল্ক হুমকি জারি রেখেছেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে চীনের সরবরাহ সীমিত করাই ওয়াশিংটনের মূল্য লক্ষ্য।
সোমবার অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের বহু-বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তির বিষয়ে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। বলেছেন যে এটি পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া উভয়ই সরবরাহ চেইনকে সুরক্ষিত করতে এবং ভূ-রাজনৈতিক নির্ভরতা কমাতে চাইছে। যদিও অস্ট্রেলিয়া তার বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীনের ওপর নির্ভরশীল।