
ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের সম্প্রসারণ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রচেষ্টার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ বৃহস্পতিবার সতর্ক করে এই মন্তব্য করেছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ঘোষণার কিছু ঘণ্টা পর আরব ও ইউরোপীয় মন্ত্রীরা একটি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। প্যারিসে মন্ত্রীদের বৈঠকটি সভাপতিত্ব করার সময় ম্যাখোঁ এ মন্তব্য করেন।
ম্যাখোঁ যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে অঞ্চলটির জন্য ‘বিশাল আশা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি বলেন, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য একটি অস্তিত্বগত হুমকি। তিনি আরো বলেন, ‘এটি শুধু অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে নয়, বরং উত্তেজনা, সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে’।
তিনি বলেন, ‘এটি আমেরিকার পরিকল্পনা এবং আমাদের সম্মিলিত শান্তিপূর্ণ অঞ্চলের জন্য গৃহীত উদ্দেশ্যের সঙ্গে মৌলিকভাবে বিরোধী।
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের হাতে আটক বেঁচে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এটিকে একটি বৃহৎ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যে যুদ্ধ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং একটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, সেই যুদ্ধটির সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে এই পদক্ষেপ।
মিসরের শারম-এল-শেখ রিসোর্টে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারী এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইউরোপ যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানালেও, ওয়াশিংটন এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ মনে করছে এটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার উপযুক্ত সময় নয়।
ম্যাখোঁ ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে এক বক্তৃতায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া কানাডা, পর্তুগাল এবং যুক্তরাজ্যসহ আরো কয়েকটি দেশ ইতিপূর্বে ঘোষণা করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণার আগে হওয়া প্যারিস বৈঠকটি ইসরায়েলকে ক্ষুব্ধ করেছে এবং ম্যাখোঁর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরবর্তী সময়ে ফরাসি-ইসরায়েলি সম্পর্ক আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সেয়ার তার এক বার্তায় বৈঠকটি ‘অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা শারম-এল-শেখের আলোচনার সময় ইসরায়েলের অগোচরে পরিকল্পিত হয়েছে। তবে ফ্রান্স আশা করছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তারা দুটি রাষ্ট্রের সমাধানকে শক্তিশালী করতে পারবে, যা প্যারিস এখনও দীর্ঘমেয়াদী আঞ্চলিক শান্তির একমাত্র সম্ভাবনা হিসেবে দেখছে।
সূত্র : আলঅ্যারাবিয়া।