
অর্থ সংকট ও যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল অনিশ্চিত থাকায় আগামী মাসগুলোয় বিশ্বব্যাপী ৯টি শান্তি রক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ ছাঁটাই করছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী সৈন্য ও পুলিশকে তাদের সরঞ্জামসহ প্রত্যাহার করা হবে। এসব মিশনে কাজ করা অনেক বেসামরিক কর্মীও এর আওতায় পড়বেন। ফলে ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী।
জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় তহবিলদাতা যুক্তরাষ্ট্র, যা মোট তহবিলের ২৬ শতাংশের বেশি দান করে। দ্বিতীয় বৃহত্তম তহবিলদাতা চীন দেয় প্রায় ২৪ শতাংশ। এই অর্থ প্রদান স্বেচ্ছাসেবী নয় এবং নির্ধারিত। তবে ১ জুলাই নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। নতুন বকেয়া ১.৩ বিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ায় বর্তমানে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২.৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুতই ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তি রক্ষা তহবিল বাতিল করেন। এ ছাড়া হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস ২০২৬ সালের জন্যও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল বাতিলের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবের পেছনে মালি, লেবানন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অভিযানের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ছাঁটাইয়ের ফলে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যকার গোলান মালভূমি এলাকা এবং আবিইতের শান্তি রক্ষা মিশনে প্রভাব পড়বে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও সংস্থার কার্যকারিতা বাড়ানো এবং খরচ কমানোর উপায় খুঁজছেন। এ বছর সংস্থার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তারা অর্থ সংকটের মুখোমুখি।
এদিকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শান্তি রক্ষা মিশনে সেনা ও পুলিশ সদস্য মোতায়েনের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।