
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের নানগারহার ও কুনার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬১০ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি।
রোববার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে ছয় মাত্রার এ ভূকম্পন। এর কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল মাত্র আট কিলোমিটার। ভূমিকম্পের পর একাধিক আফটারশক অনুভূত হয়, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তোলে।
কুনার প্রদেশের রাজধানী আসাদাবাদের প্রাদেশিক হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক ডা. মুলাদাদ জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর নতুন রোগী আসছে। তিনি বলেন, পুরো হাসপাতাল আহত রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। বিছানা না থাকায় বহু রোগীকে মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডা. মুলাদাদ আরও জানান, গত কয়েক ঘণ্টায় অন্তত ১৮৮ জন আহতকে হাসপাতালে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। পরিস্থিতিকে তিনি ‘অভূতপূর্ব সংকট’ হিসেবে বর্ণনা করে হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এখন পর্যন্ত তার হাসপাতালে চারটি মরদেহ আনা হয়েছে, তবে আরও বহু মরদেহ আশপাশের স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী নানগারহার প্রদেশের প্রধান হাসপাতালে প্রায় ২৫০ জন আহতকে ভর্তি করা হয়েছে। তালেবান সরকার বলছে, দুর্গম এলাকায় ভূমিধস ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ভূমিকম্পের ঠিক আগে গত সপ্তাহান্তে একই অঞ্চল আকস্মিক বন্যার ধকল সামলাচ্ছিল। নানগারহার ও কুনারে সেই বন্যায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং অন্তত ৪০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বন্যায় সড়ক ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তান যোগাযোগও সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছিল।
বন্যার পরপরই ভয়াবহ ভূমিকম্প ও বিপুল প্রাণহানি পূর্ব আফগানিস্তানের মানুষের দুর্ভোগ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি