১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর প্রথমবারের মতো একটি উজ্জ্বল ধূমকেতু পৃথিবীর আকাশে দেখা যেতে পারে। নাসা জানিয়েছে, ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা আগে থেকেই নির্ধারণ করা কঠিন। তবে কমেট সি/২০৪ জি৩ (অ্যাটলাস) নামের ধুমকেতুটি খালি চোখে দেখতে পাওয়ার মতো উজ্জ্বল হতে পারে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ধূমকেতুটি সূর্যের কাছে সর্বাধিক নিকটবর্তী অবস্থানে (পেরিহেলিওন) পৌঁছায়। এই কাছাকাছি অবস্থানের ফলে এর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সোমবার রাত থেকেই দৃশ্যমান হতে পারে।বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, ধূমকেতুটি শুক্রের মতো উজ্জ্বল হতে পারে, পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে ভালভাবে দেখা যেতে পারে। ধূমকেতুটি গত বছর নাসার গ্রহাণু টেরেস্ট্রিয়াল-ইম্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম দ্বারা দেখা গিয়েছিল। এদিকে এদিন ধূমকেতুটি পেরিহেলিয়নে অবস্থান করছিল।
কিংস কলেজ লন্ডনের অ্যাস্ট্রোপার্টিকেল ফিজিক্স এবং কসমোলজির গবেষক ডঃ শ্যাম বালাজি বলেছেন, ‘বর্তমান কক্ষপথের গণনাগুলি নির্দেশ করে যে এটি সূর্য থেকে প্রায় ৮.৩ মিলিয়ন মাইল পথ অতিক্রম করবে, এই কারণে এটিকে সূর্যের কাছাকাছি ঘেঁষে চলা ধূমকেতু বলা হচ্ছে।
ড. বালাজি এই ধূমকেতুকে ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবার ঘটতে যাওয়া একটি বিশেষ ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘ধূমকেতুটি পেরিহেলিওন অবস্থানে পৌঁছানোর পর দৃশ্যমান হবে। তবে এটির দৃশ্যমানতা নির্ভর করবে স্থানীয় পরিস্থিতি ও ধূমকেতুর আচরণের ওপর।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব ধূমকেতুর মতোই এটি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ও এর উজ্জ্বলতা অনিশ্চিত।’ দক্ষিণ গোলার্ধের বাসিন্দাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ধূমকেতুটি দেখার জন্য ‘সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিকের আকাশে এবং পেরিহেলিওনের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিকের আকাশে তাকানো উচিত।’
তবে ড. বালাজি সতর্ক করে বলেন, ধূমকেতুটি ‘খুব উজ্জ্বল’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এর উজ্জ্বলতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া ‘খুবই অনিশ্চিত’ এবং অনেক সময় ধূমকেতু প্রত্যাশার চেয়ে ম্লান হয়ে যায়। সূর্যের সঙ্গে ধূমকেতুর অবস্থানগত সম্পর্কের কারণে উত্তর গোলার্ধ থেকে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে এটি দেখা কঠিন হতে পারে।
বালাজি ধূমকেতু দেখতে ইচ্ছুক লোকদের দূরবীন বা একটি ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধূমকেতুর পথ অনুসরণ করছেন। নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে তোলা ধূমকেতুটির একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন।
সূত্র : বিবিসি