Image description

ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছে সিআরপিএফের এএসআই মোতিরাম জাটের বিরুদ্ধে।

জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) তাকে গত মে মাসে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মোতিরাম শুধু নিজেই তথ্য পাচার করতেন না; বরং পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের কাছে সেনা, আধাসামরিক বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অন্তত ১৫ কর্মীর ফোন নম্বরও পৌঁছে দিয়েছিলেন।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মোতিরামের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন ‘সেলিম আহমেদ’ নামে এক পাকিস্তানি গুপ্তচর। তদন্তকারীরা মোতিরামের সব কলরেকর্ড ও ইন্টারনেট প্রোটোকল খতিয়ে দেখেছেন, ওই ১৫ জনের মধ্যে চারজন সেনা অফিসার, চারজন আধাসামরিক বাহিনীর কর্মী এবং সাতজন কেন্দ্রীয় দপ্তরের কর্মী। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

তদন্তে আরো জানা গেছে, গত দুই বছরে নিয়মিত প্রায় ১২ হাজার টাকা করে পেতেন মোতিরাম। ওই টাকা জমা হতো তার ও স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিসগড়, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক রাজ্য থেকে ওই অর্থ পাঠানো হয়েছে।

এখানে শাহজাদ নামে এক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াড তাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ, শাহজাদও পাকিস্তানি আইএসআইয়ের কাছে গোপন তথ্য পাচার করতেন। জেরায় তিনি দাবি করেন, একবার ট্রেনে সহযাত্রীর অনুরোধে তিনি মোতিরামের অ্যাকাউন্টে তিন হাজার ৫০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন।

অন্যদিকে মোতিরাম পুলিশের জেরায় জানান, এক নারী সাংবাদিক পরিচয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই নারী নিয়মিত ফোন ও ভিডিওকলে কথা বলতেন এবং সেখান থেকেই শুরু হয় গোপন নথি পাঠানো।

কয়েক মাস পর এক ব্যক্তি নিজেকে ওই সাংবাদিকের সহকর্মী পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ শুরু করেন, যিনি আসলে পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছিলেন বলে সন্দেহ করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।

সূত্রের দাবি, মোতিরাম যেসব তথ্য পাচার করেছিলেন, তার মধ্যে রয়েছে- নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েনসংক্রান্ত নথি, সরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের রিপোর্ট, সেনা ও সন্ত্রাসবাদীদের গতিবিধি সম্পর্কিত তথ্য।

এ ঘটনায় আরো বড় নেটওয়ার্ক জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এনআইএ সূত্রের খবর, ধৃত মোতিরাম সিআরপিএফে এএসআই পদে ছিলেন। পেহেলগামে জঙ্গি হামলার পর থেকেই তার কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় প্রথমে সতর্ক হয় সিআরপিএফ ।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাকে তুলে দেওয়া হয় এনআইএর হাতে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। গোয়েন্দাদের কড়া নজর এখন মোতিরামের সংযোগ সূত্র ও পাকিস্তানি আইএসআইয়ের হাত কতদূর ছড়িয়েছে তার দিকে।