
মধ্যপ্রাচ্যের নির্যাতিত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের মধ্যে ফার্স নিউজ এজেন্সি সম্প্রতি একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা লিখেছে- গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, এবং বিশেষ করে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালের হামলার পর, অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে ইহুদিবাদী দখলদারদের বিপরীত অভিবাসনের প্রক্রিয়া জোরদার হয়েছে।
এই সব ইহুদিবাদী দখলদারদের অধিকাংশই শিক্ষিত এবং প্রযুক্তি, চিকিৎসা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরানি মিডিয়া পার্স টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী- গত এক বছরের মধ্যে ৮২ হাজারেরও বেশি ইহুদিবাদী এলিট ও বিশেষজ্ঞ অধিকৃত অঞ্চল ত্যাগ করেছে। মূলত ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী তরুণ, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ ও পেশাদার গোষ্ঠী থেকে আসা ইহুদিবাদী অভিবাসীরা অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কারণে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইহুদিবাদী বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যারন সিচানোফার অভিবাসনের এই ঢেউ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন- "যদি এই গুরুত্বপূর্ণ অভিজাতদের মধ্যে মাত্র ত্রিশ হাজার জন ইসরায়েল ছেড়ে চলে যায়, তাহলে ইসরায়েলের কার্যত কোনো ভবিষ্যৎ থাকবে না।"
তার মতে, এই পরিস্থিতির মূল কারণ নেতানিয়াহুর ডানপন্থি সরকারের নীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির দুর্বলতা। আর এর ফলে ইসরায়েলের প্রগতিশীল অংশগুলো নিরাপত্তাহীন ও অসহায় বোধ করছে।
ইসরায়েলি এলিটদের বা অভিজাত ইহুদিবাদীদের অধিকৃত ফিলিস্তিন ত্যাগ করার পাশাপাশি অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে মূলধনের প্রবাহও উদ্বেগজনক হারে বের হয়ে যাওয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরায়েলিরা ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে সাত বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূলধন বিদেশে স্থানান্তর করেছে বলে জানা গেছে, যা আগের তিন বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই পরিস্থিতির জন্য গাজা যুদ্ধ, বিচার বিভাগীয় সংস্কার এবং ঊর্ধ্বতন নির্বাহীদের বরখাস্তকে দায়ী করছেন, যা ইসরায়েলের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর আস্থা মারাত্মকভাবে হ্রাস করেছে। অনেক ধনী ব্যক্তি ও বিনিয়োগকারী তাদের সম্পদ বিদেশে স্থানান্তর করতে এবং সেখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। সূত্র: পার্স টুডে