
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর ইস্যুতে যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ভারতের রাজধানী। সোমবার (১১ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিতে যোগ দেন বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতারা—রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, অখিলেশ যাদব, মহুয়া মৈত্র থেকে সঞ্জয় রাউত।
কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আটকাতে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠে অতি সক্রিয়তা ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ। বহু সংসদ সদস্যকে জোর করে আটক করা হয়, এমনকি কয়েকজন নারী সাংসদকে চুলের মুঠি ধরে বাসে তোলার অভিযোগও ওঠে। ধস্তাধস্তিতে তৃণমূলের দুই এমপি মহুয়া মৈত্র ও মিতালী বাগ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পর দিন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি জানান, লোকসভা ভেঙে দেওয়া হোক এবং কেন্দ্রের সরকার পদত্যাগ করুক।
তার ভাষ্য, ‘ভোটার তালিকা যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে যে লোকসভা এই তালিকা দিয়ে গঠিত, সেটি বাতিল হওয়া উচিত। কেন্দ্রের সরকারকেই পদত্যাগ করতে হবে। গোটা দেশে এসআইআর করুন, শুধু বিরোধী শাসিত রাজ্যে নয়।’
অভিষেক অভিযোগ তোলেন, বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে তল্পিবাহকে পরিণত করেছে। বিহারের মতো রাজ্যে গণতান্ত্রিক ভোট হলে বিজেপি হারবে বলেই এই সংশোধনী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলায় একজনেরও ভোটাধিকার কেড়ে নিলে এক লক্ষ মানুষ নিয়ে কমিশন ঘেরাও করব। বিজেপিকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।’
সোমবার বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলেও দিল্লি পুলিশের ‘বর্বরতা’ নিয়ে তৃণমূল নেতার ক্ষোভ বিস্ফোরণ হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন—বিজেপিশাসিত রাজ্যে কেন এসআইআর হচ্ছে না? কেন বেছে বেছে বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলোতে এই পদক্ষেপ?’ এটা গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা বরেও অভিযোগ করেন অভিষেক।
রাজনৈতিক মহলে অভিষেকের এই মন্তব্যকে বিরোধী শিবিরের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের রূপরেখা বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে এভাবে সরাসরি লোকসভা ভাঙার দাবি তুলেছেন বিরোধীদের অন্যতম মুখপাত্র, যা আগামী দিনে সংসদ ও রাস্তায় আরও সংঘাত ডেকে আনতে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলছে।